প্রত্নতাাত্ত্বিক বহু নিদর্শন ছড়িয়ে রয়েছে গাইবান্ধায়। কিন্তু অবহেলা আর সচেতনতার অভাবে হারিয়ে যেতে বসেছে এখানকার পুরাকীর্তিগুলো।
গাইবান্ধা জেলা প্রশাসন সূত্র ও সরেজমিনে দেখা যায়, অষ্টাদশ শতাব্দীতে নির্মিত পলাশবাড়ীর নুনিয়াগাড়ী এলাকার এক গম্বুজবিশিষ্ট কাদিরবক্স মন্ডলের মসজিদে ইমামসহ মাত্র চার জন নামাজ আদায় করেন।
ব্রিটিশ শাসনামলে রাজা-বাদশাহ বা জমিদাররা গাইবান্ধা পৌরসভার পূর্বপাড়ায় অবস্থিত লোন অফিস থেকে লোন দিতেন ও আদায় করতেন। এর নির্মাণশৈলী সহজেই আকৃষ্ট করে মানুষকে।
গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার রাজাহার ইউনিয়নের রাজা বিরাট এলাকায় রাজ প্রাসাদসহ তিনটি স্থাপনা দীর্ঘদিন আগেই মাটির নিচে অনেকটাই দেবে গেছে। দেবে যাওয়া রাজপ্রাসাদ ও অন্য দুইটি স্থাপনার উপরের অংশ এখন মাটিতে পরিণত হওয়ায় মনে হয় এসব শুধুমাত্র উঁচু মাটির ঢিবি বা স্তুপ।
সুদূর প্রাচীনকাল থেকেই রাজা-বাদশাহদের গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক ইউনিট হিসেবে পরিচিত গোবিন্দগঞ্জ পৌরসভার বর্ধনকুঠি। এখানকার দুইটি ভবনের দেয়াল ও কক্ষের ভেতর জন্মেছে আগাছা। সাদুল্লাপুর উপজেলার নলডাঙ্গা ইউনিয়নের কালীবাড়ী পাড়া গ্রামে উপমহাদেশের প্রখ্যাত নাট্যকার, শিল্পী ও চলচ্চিত্রকার তুলসী লাহিড়ীর জমিদার বাড়ী নিশ্চিহ্ন হওয়ার পথে।
এর মধ্যে ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারিতে থাইল্যান্ডের রাজকন্যা মাহা চাক্রী শিরিনধর্ন জোতদার প্যারীমাধব সরকারের ঐতিহাসিক বাড়ীটি পরিদর্শন করেছেন।
অনেকের কাছে খোঁজ করেও দরিয়ার দুর্গ মাউন্ড ও ধ্বংসপ্রাপ্ত দরগাহ সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি এবং অন্য দুটিতে প্রত্বতত্ত অধিদপ্তরের কোন সাইনবোর্ড বা ইতিহাস সম্বলিত কোন লেখা নেই।
শুধু স্থাপনা দুটি তালিকায় উঠেছে, বাস্তবে সংরক্ষণের কোন দৃশ্য চোখে পড়েনি। এতসব স্থাপনার তথ্য নেই গাইবান্ধা জেলার জাতীয় ওয়েব পোর্টালে এবং সংরক্ষণের কোন উদ্যোগ নেই জেলা প্রশাসনের।
ঐতিহাসিক স্থাপনার নির্মাণশৈলী ও নকশা সহজেই নজর কাড়ে জানিয়ে প্রবীন ব্যক্তি কবি সরোজ দেব বলেন, প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন সরকারিভাবেই সংরক্ষণ করে বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা উচিত। তা হলেই একদিকে যেমন এসব গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা সম্পর্কে জানা যাবে তেমনি সুস্থ বিনোদনেরও ব্যবস্থা হবে।
এ বিষয়ে গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক মো. অলিউর রহমান বলেন, যেসব প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন সংরক্ষণ করা প্রয়োজন বা সংরক্ষণের সুযোগ আছে সেসব নিদর্শন সংরক্ষণ করা হবে। আমরা এ বিষয়ে একটি উপকমিটি করবো। বিষয়টি নিয়ে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরকেও চিঠি দিয়ে জানানো হবে।