× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

শীঘ্রই বাংলাদেশ-ভারত রেল চলাচল

হালিম মোহাম্মদ

১২ মার্চ ২০২২, ০৬:৫৩ এএম

করোনার সংক্রমণ এখন অনেকটাই নিম্নমুখী। যে কারণে এরই মধ্যে তুলে দেওয়া হয়েছে বিধিনিষেধ। খুলে দেয়া হয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও। এদিকে গণপরিবহন চলাচলও স্বাভাবিক হয়েছে, প্রায় দুই বছরের বেশী সময় প্রতীক্ষার পর খুব শীঘ্রই চালু হচ্ছে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে রেল যোগাযোগ। প্রথম পর্যায়ে যে দুইটি রুটে মৈত্রী এক্সপ্রেস ও বন্ধন এক্সপ্রেস রেল চলাচল শুরু করবে। এ বিষয় নিয়ে চিঠি চালাচালির পর এখন প্রক্রিয়া চলছে।

রেলপথ মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ভারতগামী সব ট্রেন চলাচলের জন্য প্রস্তুত রয়েছে। ভারত সরকারের দিক থেকে ইতিবাচক সাড়া মিলেছে। এখন শুধু সিদ্ধান্তের অপেক্ষায়। এ সপ্তাহেই ভারতের সঙ্গে রেলপথ মন্ত্রণালয়কে আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে বলে জানান কর্মকর্তারা।

এ প্রসঙ্গে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. হুমায়ুন কবীর বৃহস্পতিবার মুঠোফোনে সংবাদ সারাবেলাকে বলেন, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতি এখন অনেকটাই স্বাভাবিক। বিধিনিষেধ আমাদের দিক থেকে তুলে দেওয়া হয়েছে, কিন্তু ভারতের পরিস্থিতিও ক্রমান্বয়ে স্বাভাবিক হয়ে আসছে। তাদের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছি। ভারতের সঙ্গে রেল চলাচলের সকল প্রস্তুতি রয়েছে। শীঘ্রই বাংলাদেশের পক্ষ থেকে অনুমতি চেয়ে ভারতের রেলপথ মন্ত্রণালয়ের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

জানা গেছে, রেলপথ মন্ত্রণালয় সূত্র অনুযায়ী ২০০৮ সালের ১৪ এপ্রিল বাংলা নববর্ষেও প্রথম দিনে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে বন্ধুত্বের প্রতীক হিসেবে যাত্রা শুরু করে মৈত্রী এক্সপ্রেস। ওই যাত্রার উদ্বোধন করেছিলেন ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জী। দীর্ঘ ৪৩ বছর পর দুই দেশের মধ্যে এ ট্রেন যাত্রার সূচনা হয়েছিল। ঢাকা-কলকাতা পথে সপ্তাহে মৈত্রী এক্সপ্রেসের আটটি  ট্রেন আসা- যাওয়া করত। এরমধ্যে বাংলাদেশের চারটি, ভারতের চারটি ট্রেন। সম্পূর্ণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত মৈত্রী ঢাকা থেকে সপ্তাহে তিন দিন ছেড়ে যেত। মৈত্রী এক্সপ্রেস সপ্তাহে পাঁচদিন চলত।

প্রতি শুক্রবার, শনিবার, রোববার এবং মঙ্গলবার ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট রেলওয়ে স্টেশন থেকে ছেড়ে যেত মৈত্রী এক্সপ্রেস। আর কলকাতার চিৎপুর এলাকার কলকাতা স্টেশন থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে আসতো শুক্রবার, সোমবার, মঙ্গলবার এবং বুধবার।

ঢাকা-কলকাতা এসি কেবিনের ভাড়া প্রতি সিট ২ হাজার ৯৩৫ টাকা সঙ্গে আরও দিতে হবে ভ্রমণ কর ৫০০ টাকা। আর এসি চেয়ার ১ হাজার ৯৫৫ টাকার সঙ্গে ভ্রমণ কর ৫০০ টাকা যোগ করে ২ হাজার ৪৫৫ টাকা। আর কলকাতা- ঢাকা এসি কেবিনের ভাড়া প্রতি সিট ২ হাজার ১৫ রুপি আর এসি চেয়ারে জন প্রতি ভাড়া ১ হাজার ৩৪৫ রুপি। ১ থেকে ৫ বছর বয়সী শিশুদের জন্য ৫০ শতাংশ ছাড় প্রযোজ্য হবে। তবে তা নির্ধারিত হবে পাসপোর্ট অনুযায়ী।

অন্যদিকে ২০১৭ সালের ৯ নভেম্বর খুলনা-কলকাতা পথে বন্ধন এক্সপ্রেস চলাচলের সূচনা হয়। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং কলকাতার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় এই  ট্রেন সার্ভিসের উদ্বোধন করেন।

প্রাথমিকভাবে একদিন করে চালু হলেও পরে বাড়ানো হয় উভয় ট্রেনের ট্রিপ। এটি প্রথম দিকে বাংলাদেশের খুলনা থেকে প্রতি বৃহস্পতিবার ছেড়ে যেত এবং দুপুরে কলকাতা যাত্রা শুরু করে বন্ধন। এরপর পেট্রাপোল, যশোরের বেনাপোল হয়ে যশোর হয়ে খুলনা পৌঁছায়। এ ছাড়া এই ট্রেনে এক্সিকিউটিভ চেয়ার ও এসি চেয়ারের ব্যবস্থা রয়েছে। খুলনা-কলকাতার এক্সিকিউটিভ চেয়ারের ভাড়া ১ হাজার ৪৭০ টাকা সঙ্গে ৫০০ টাকা ভ্রমণ কর রয়েছে। এসি চেয়ার ৯৮০ টাকার সঙ্গে যোগ হবে ভ্রমণ কর ৫০০ টাকা।

অপরদিকে ঢাকা- জলপাইগুড়ি পথে চলাচল করে মিতালী এক্সপ্রেস। চলাচল শুরু করে। এটিও দুই দেশের বন্ধুত্বের প্রতীক হিসেবেই ২০২১ সালের ২৭ মার্চ এই ট্রেন সার্ভিস চালু করা হয়। এটি ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট রেলওয়ে স্টেশন থেকে ছেড়ে গিয়ে ভারতের শিলিগুড়ির নিউ জলপাইগুঁড়িতে গিয়ে থামে। এটি তৃতীয় ট্রেন যা বাংলাদেশ থেকে ভারতে যাতায়াত করে। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকে এ সব পথেই ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে।

জানা গেছে, বাংলাদেশে মহামারি করোনাভাইরাসের হানা শুরু হওয়ার সময়েই মৈত্রী ও বন্ধন এক্সপ্রেস বন্ধ করে দেওয়া হয়। আর করোনার সংক্রমণের কারণে উদ্বোধন হওয়া মিতালী যাত্রাই শুরু করতে পারেনি। সব মিলিয়ে টানা দুই বছর ধরে বন্ধ রয়েছে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে সকল ধরনের যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল।

এ প্রসঙ্গে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. হুমায়ুন কবীর বলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতি এখন অনেকটাই স্বাভাবিক। বিধিনিষেধ যদিও আমাদের দিক থেকে তুলে দেওয়া হয়েছে। ভারতের সঙ্গে  ট্রেন চলাচলের জন্য সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। শিগগিরই বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে ট্রেন চলাচল শুরু করতে প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর বিমানের মতো বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। বিমান চলাচল শুরুর পর থেকেই ট্রেন চালুর দাবি উঠেছিল। কারণ বাংলাদেশের অনেক মানুষ চিকিৎসা, ভ্রমণ, ব্যবসাসহ নানা কাজে ভারতে যাতায়াত করে থাকেন। নিরাপদে যাতায়াতে অনেকেই রেলপথ বেছে নেন।

এদিকে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, করোনাকালে ভারত থেকে রেলপথে পণ্য আমদানি অনেকে বেড়েছিল। ফলে ২০২০-২১ অর্থবছরে ভারত থেকে রেলপথে পণ্য আমদানি হয় প্রায় ৩৬ লাখ ৯৪ হাজার মেট্রিক টন। এর আগের অর্থবছরের চেয়ে পণ্য আমদানির পরিমাণ বেড়েছে ১২৬ শতাংশ।

Sangbad Sarabela

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । 01894-944220 । [email protected], বিজ্ঞাপন: 01894-944204

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.