বেশি খাবার খাওয়া কোনো সমস্যা নয়, তবে এটিকে অভ্যাসে পরিণত করলে তা শরীরের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। অতিরিক্ত খাওয়ার অভ্যাস মানসিক চাপ, আবেগ এবং অনেক সময় একঘেয়েমির সঙ্গে সম্পর্কিত থাকে। শরীরের প্রয়োজনের চেয়ে বেশি খাওয়ার ফলে অলসতা, পেট ফাঁপা এবং অস্বস্তি দেখা দিতে পারে। অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে শরীরের স্বাভাবিক ক্ষুধার সংকেত ব্যাহত হতে পারে। এটি ইনসুলিন প্রতিরোধ, লিভারের সমস্যা, এমনকী হৃদরোগের ঝুঁকিও বাড়তে পারে। আপনার অতিরিক্ত খাওয়ার অভ্যাস দূর করবে কিছু সহজ অভ্যাস-
পরিমিতিবোধ এবং সচেতনতা
জাপানের ওকিনাওয়ার দ্বীপের মানুষরা সবচেয়ে বেশি দিন বেঁচে থাকে বলে পরিচিত। এরা হারা হাচি বু ধারণা অনুসরণ করে, যার অর্থ ৮০% পেট ভরে গেলে খাওয়া বন্ধ করে দেওয়া। এই কার্যকলাপের অর্থ কঠোর হওয়া নয়, বরং এটি পরিমিতিবোধ এবং সচেতনতা।
একইভাবে, যেকোনো খাবার খাওয়ার আগে ৩০ সেকেন্ডের বিরতি সচেতনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করার জন্য যথেষ্ট। এই অভ্যাস অতিরিক্ত খাওয়া এবং এর ফলে যে অস্বস্তিকর অনুভূতি হতে পারে তা প্রতিরোধ করতে পারে।
খাবারের আগে পানি পান
একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, যারা খাবারের আগে ৫০০ মিলি পানি পান করেছেন তারা যারা পান করেননি তাদের তুলনায় কম ক্যালোরি খেয়েছেন। মূলত খাবারের আগে পানি পান করলে পেট দ্রুত ভরে যায় এবং অতিরিক্ত খাওয়া রোধ করা যায়। কখনও কখনও শরীর ক্ষুধাকে তৃষ্ণার সঙ্গে গুলিয়ে ফেলে। পানি পান করলে তা কেবল ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে না বরং শক্তি, বিপাক এবং হজমেও সাহায্য করে।
ছোট প্লেট এবং বাটি ব্যবহার
প্লেটের আকার আমাদের খাবারের পরিমাণের ওপর প্রভাব ফেলে। প্লেটের আকার এবং খাবারের তৃপ্তি সংক্রান্ত একটি গবেষণায় অতিরিক্ত খাবার খাওয়া প্রতিরোধের জন্য ছোট প্লেট ব্যবহারের কার্যকারিতা সম্পর্কে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আরেকটি গবেষণায় দেখা গেছে, বড় প্লেটে পরিবেশিত লোকেরা বেশি খাবার গ্রহণ করে এবং অজান্তেই বেশি খায়। একইভাবে ছোট প্লেট এবং বাটি ব্যবহার করলে তা আমাদের মনকে কম খাবারে তৃপ্তি বোধ করতে প্ররোচিত করে।
ঘুম এবং স্ট্রেস থেকে দূরে থাকুন
কখনও কখনও অতিরিক্ত খাওয়া কেবল নিজেকে নিয়ন্ত্রণ না করার কারণ নয়, বরং ক্রমাগত মানসিক চাপও অতিরিক্ত খাওয়ার দিকে নিয়ে যেতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে যে, কর্টিসল নিঃসৃত হলে তা ক্ষুধা বাড়ায়। স্ট্রেস ইটিং নামে একটি শব্দ আছে এবং এর পেছনে হরমোন রয়েছে। একইভাবে, ঘুমের অভাব কর্টিসলও নিঃসরণ করতে পারে এবং স্ট্রেস ইটিং পর্যায়ে ঠেলে দিতে পারে। তাই ঘুমের রুটিন ঠিক করুন এবং মানসিক চাপ মুক্ত থাকার চেষ্টা করুন।