এনামুল হক বিজয় ও মুনিম শাহরিয়ারের জন্য দ্বিতীয় ম্যাচটি ছিল অনেকটা 'ফাইনাল পরীক্ষা'র মতো। সেই পরীক্ষায় দুই টপঅর্ডার ব্যাটারই ডাহা ফেল মেরেছেন। শেষ ম্যাচে পারভেজ হোসেন ইমনকে জায়গা করে দিতে তাঁদের একজনের বাদ পড়াটা নিশ্চিত।
জিম্বাবুয়ের দুর্বল বোলিংয়ের বিপক্ষে তাঁরা যেভাবে ব্যাট চালিয়েছেন, তাতে স্কোয়াডে বাড়তি আরেকজন ব্যাটার থাকলে দু'জনকেই ছুড়ে ফেলা হতো। সেটা না করা হলেও এ সিরিজের পারফরম্যান্সে তাঁদের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের ওপর বড় একটা প্রশ্নবোধক চিহ্ন পড়ে গেল।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ভীষণ কঠিন জায়গা। এখানে সর্বদাই ঘাড়ের ওপর প্রতিদ্বন্দ্বী নিশ্বাস ফেলছে। পারফর্ম করতে না পারলে ছিটকে পড়াটা খুবই স্বাভাবিক ঘটনা। তরুণ ওপেনার মুনিম শাহরিয়ারের বেলায়ও তেমনটাই ঘটতে যাচ্ছে। তাঁকে দলে নেওয়া হয়েছে পাওয়ার প্লেতে ঝোড়ো ব্যাটিং করার সামর্থ্যের জন্য। অথচ ঘরের মাঠে আফগানিস্তানের বিপক্ষে দুই ম্যাচ, উইন্ডিজে এক ম্যাচ ও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টি২০তে ঠিকমতো ব্যাটে বলই লাগাতে পারেননি ২৪ বছর বয়সী এ ব্যাটার।
জিম্বাবুয়েতে প্রথম ম্যাচে বাজে ব্যাটিংয়ের পর টিম ম্যানেজমেন্টের অনেকেই মুনিম শাহরিয়ারকে বাদ দেওয়ার পক্ষে ছিলেন। ঢাকা থেকেও এমন বার্তাই গিয়েছিল হারারেতে। কিন্তু কোচ রাসেল ডমিঙ্গোর কারণে দ্বিতীয় ম্যাচেও সুযোগ পান মুনিম। শেষ সুযোগ দেওয়ার কথা বলে নাকি তাঁকে এ ম্যাচে একাদশে রাখেন কোচ। সে সুযোগটিও কাজে লাগাতে পারেননি, ৮ বলে ৭ করে বোল্ড হয়েছেন।
বিপিএল ও প্রিমিয়ার টি২০ বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ের জন্যই তাঁকে জাতীয় দলে নেওয়া। কিন্তু এখন পর্যন্ত ৪ টি২০তে মোট ৩৯ বল খেলে একটি মনে রাখার মতো শট খেলতে পারেননি। টিম ম্যানেজমেন্টের হতাশার বড় কারণ এটি।
সাড়ে সাত বছর পর জাতীয় দলে ফেরা এনামুল হক বিজয়কেও একই ভাগ্য বরণ করতে হতে পারে। কয়েক বছর আগে জাতীয় দলের সাবেক কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে এক গোপন রিপোর্টে বিজয়কে 'স্বার্থপর' ক্রিকেটার বলেছিলেন। এতদিন পর তিনি জাতীয় দলে ফিরেও সে অপবাদ ঘোছাতে পারেননি। প্রিমিয়ার লিগে হাজারের ওপর রান করায় উইন্ডিজ সফরে সুযোগ দেওয়া হয় তাঁকে।
সেখানে তিন টি২০তে যথাক্রমে ১০ বলে ১৬, ৪ বলে ৩ ও ১১ বলে ১০ রান করেন। উইন্ডিজে উইকেট কিছুটা মন্থর থাকায় এবং বাকিরাও তেমন ভালো না করায় তাঁর ইনিংসগুলো চোখে পড়েনি। কিন্তু জিম্বাবুয়েতে প্রথম ম্যাচে তাঁর ব্যাটিং ছিল ভীষণ দৃষ্টিকটু। দুইশ’ রান তাড়া করতে নেমে ২৭ বলে ২৬ রান করেন তিনি।
তাতেই পুরোনো স্বার্থপর তকমাটা বেরিয়ে আসে। এ কারণেই তাঁকে বাদ দিতে চেয়েছিলেন ম্যানেজমেন্টের অনেকে। তাকেও কোচই একাদশে রাখেন। কিন্তু কোচের দেওয়া এ সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি তিনি। টিম ম্যানেজমেন্ট সূত্রের ইঙ্গিত, ভবিষ্যতে অন্য ফরম্যাটে তাঁকে সুযোগ দেওয়া হলেও টি২০তে দেখতে পাওয়ার সম্ভাবনা কম।
© 2022 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh