সাম্প্রতিক সময়ে দারুণ নৈপুণ্য দেখাচ্ছে বাংলাদেশের পেস বোলিং ডিপার্টমেন্ট। দেশ কিংবা দেশের বাইরে জয়ের পথ সুগম করার কাজটা আগের চেয়ে তুলনামূলক ভালো করছেন ফাস্ট বোলাররা। তবে, একসময় যাকে ভাবা হতো দলের পেস বোলিংয়ের নেতা সেই মুস্তাফিজুর রহমান এখন অনেকটাই ফিকে হয়ে পড়েছেন।
ক্যারিয়ারের শুরুতে যে জাদুকরী পারফরম্যান্স দেখিয়েছিলেন, তা যেন এখন সুদূর অতীত। কয়েক বছর ধরেই চলছে তার ছন্দহীনতা।
বিশ্বকাপের প্রস্তুতিপর্বে দলের টেকনিক্যাল কনসালটেন্ট শ্রীধরন শ্রীরাম জানিয়েছিলেন, মুস্তাফিজের মূল অস্ত্র স্লোয়ার নিয়ে কাজ করছেন তারা। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে জয়ের পর একই কথা বললেন দলের আরেক পেসার তাসকিন আহমেদ। তার বিশ্বাস, দ্রুতই আগের রূপে ফিরবেন মুস্তাফিজ।
নিউ জিল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজের প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৪ ওভারে ৪৮ রান দিয়েছিলেন মুস্তাফিজ। ওই সিরিজের পরের তিন ম্যাচে আর খেলানো হয়নি তাকে। পরে আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে ৪ ওভারে ৩১ রান দেন তিনি। সেদিনের বোলিংয়ে উন্নতির ছাপ দেখেছিলেন শ্রীরাম।
হোবার্টের উইকেট-কন্ডিশন বিবেচনায় নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে শরিফুল ইসলামকে টপকে একাদশে জায়গা পেয়ে যান মুস্তাফিজ। তাসকিন, হাসান মাহমুদদের আগুনঝরা বোলিংয়ের দিন মুস্তাফিজকে দেখা গেছে নিজের চেনা ছন্দের কাছাকাছি।
২০২১ সালে শেষ দিকের ওভারে প্রায় ৭০ শতাংশ ডেলিভারি স্লোয়ার করতেন মুস্তাফিজ। সেটি চলতি বছর নেমে গেছে ৪৬ শতাংশে। তবে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ১৯তম ওভারে বোলিংয়ে এসে দুই ওয়াইডসহ আট বলের মধ্যে ছয়টিই স্লোয়ার করেন তিনি।
ব্যাক অব লেংথের প্রথম ডেলিভারিতে বাউন্ডারি হজম করলেও শেষ পাঁচ বলে ব্যাট থেকে আসে মাত্র ১ রান। আগের তিন ওভারেও দারুণ স্লোয়ার-কাটারে ডাচ ব্যাটসম্যানদের আটকে রাখার কাজটি দারুণভাবে করেন মুস্তাফিজ। উইকেট না পেলেও চার ওভারে দেন স্রেফ ২০ রান।
ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে সতীর্থ পেসারের পাশে দাঁড়ালেন তাসকিন। বললেন, প্রক্রিয়া অনুসরণ করে পরিশ্রম করে যাচ্ছেন মুস্তাফিজ।
“একজন ক্রিকেটারের খারাপ সময় যেতেই পারে। আমি যা দেখছি, মুস্তাফিজ ভালো বোলিং করছে। ও অনেক কঠোর পরিশ্রম করছে। প্রক্রিয়াটা খুব ভালোভাবেই মেনে চলছে। দ্রুতই দেখবেন যে সে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। কারণ সে আমাদের অনেক ম্যাচ জিতিয়েছে।”
“মুস্তাফিজ চ্যাম্পিয়ন বোলার। হয়তো মাঝে দুই-একটি ম্যাচ ভালো যায়নি। তবে সে সামনে ভালো করবে। এখন তার হাতে আছে প্রক্রিয়া ঠিক রাখার বিষয়টি। সেটি সে ভালোভাবেই মানছে, কঠোর পরিশ্রম করছে। আমরা সবাই-ই উন্নতির চেষ্টা করছি।”