‘জিতলেই সেমিফাইনাল’- ঠিক এমনই একটি সমীকরণের শুরু হচ্ছে আজ থেকে। ৩২ দলের মধ্যে বাকি আছে মাত্র ৮টি দল। তাদের নিয়েই আজ থেকে শুরু হচ্ছে হাইভোল্টেজ সুপার এইট পর্ব। কাতার বিশ্বকাপের শেষ আটের লড়াইয়ে আজ দিনের প্রথম ম্যাচে রাত ৯টায় শক্তিশালী ব্রাজিলের মুখোমুখি হবে ক্রোয়েশিয়া। দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশ সময় রাত ১টায় নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে লড়বে শক্তিশালী আর্জেন্টিনা।
পাঁচবার বিশ্বকাপ জয়ী ব্রাজিল এবারও ফেভারিট দলগুলোর একটি। রেকর্ড আরও সমৃদ্ধ করার অভিযানে তাদের পরের চ্যালেঞ্জ গত আসরের রানার্সআপ ক্রোয়েশিয়া। যে দলের বিপক্ষে এখন পর্যন্ত অপরাজিত লাতিন আমেরিকানরা।
কোয়ার্টার-ফাইনালে দুই দলের আরও কিছু পরিসংখ্যান-
একমাত্র দল হিসেবে এখন পর্যন্ত বিশ্বকাপের প্রতিটি আসরে খেলেছে ব্রাজিল। সবশেষ ২০০২ সালে শিরোপা জেতার পর আর ফাইনালে যেতে পারেনি তারা। এ নিয়ে বিশ্বকাপে ষষ্ঠ আসর খেলছে ক্রোয়েশিয়া। বিশ্ব সেরার মঞ্চে তাদের সর্বোচ্চ সাফল্য চার বছর আগে রানার্সআপ হওয়া। রাশিয়া আসরের ফাইনালে ফ্রান্সের কাছে ৪-২ গোলে হেরে যায় তারা।
বিশ্বকাপে নিজেদের সবশেষ ১১ ম্যাচের ১০টিতে অপরাজিত ক্রোয়েশিয়া। তাদের একমাত্র হার ফ্রান্সের বিপক্ষে, ২০১৮ বিশ্বকাপের ফাইনালে (৪-২)। এবার দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের বাছাইপর্বে অপরাজিত থেকে কাতারে আসে ব্রাজিল। গ্রুপ পর্বে প্রথম দুই ম্যাচ জয়ের পর নিজেদের শেষ ম্যাচে ১-০ গোলে হেরে যায় তারা ক্যামেরুনের কাছে।
এবার নিয়ে সবশেষ আট বিশ্বকাপেই অন্তত কোয়ার্টার-ফাইনালে খেলছে ব্রাজিল। এর মধ্যে ১৯৯৪ ও ২০০২ সালে শিরোপা ঘরে তোলে তারা। ১৯৯৮ সালে হয়েছিল রানার্সআপ। ২০০২ সালের পর কেবল একবার সেমি-ফাইনালে খেলেছে ব্রাজিল। ঘরের মাঠে ২০১৪ সালে জার্মানির কাছে সেবার তারা হারে ৭-১ গোলে। এবারের আসরে এখন পর্যন্ত খেলা চার ম্যাচের মধ্যে কেবল একটিতে ৯০ মিনিটের মধ্যে জিতেছে ক্রোয়েশিয়া। গ্রুপ পর্বে কানাডার বিপক্ষে পায় ৪-১ গোলের জয়। মরক্কো ও বেলজিয়ামের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করে দলটি। শেষ ষোলোয় জাপানের বিপক্ষে নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময় ১-১ সমতায় শেষ হওয়ার পর টাইব্রেকারে জেতে ৩-২ ব্যবধানে।
অপরদিকে বিশ্বসেরার মঞ্চে ৩৬ বছরের শিরোপা খরা কাটানোর লক্ষ্যে ছুটে চলেছে আর্জেন্টিনা। আর প্রথম বিশ্বকাপ শিরোপা জিততে মরিয়া নেদারল্যান্ডস। সেমি-ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে মুখোমুখি হতে যাচ্ছে এই দুই দল। বিশ্ব মঞ্চে দুই দল এরই মধ্যে পরস্পরের বিপক্ষে পাঁচটি ম্যাচ খেলেছে। যেখানে সমানে-সমান অবস্থানে তারা। এবার সমতা ভাঙার লড়াইয়ে নামবে দল দুটি। বৈশ্বিক আসরে আর্জেন্টিনার হয়ে সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ডে নাম লেখানোর অপেক্ষায় আছেন লিওনেল মেসি। স্রেফ একটি গোল প্রয়োজন সময়ের সেরা এই ফরোয়ার্ডের।
কোয়ার্টার-ফাইনালে দুই দলের আরও কিছু পরিসংখ্যান-
বিশ্বকাপে এনিয়ে ষষ্ঠবার মুখোমুখি হতে যাচ্ছে আর্জেন্টিনা ও নেদারল্যান্ডস। আগের পাঁচ দেখায় দুটি করে ম্যাচ জিতেছে দুই দল। আরেকটি ড্র। বিশ্ব মঞ্চে দুই দলের প্রথম দেখায় হারের তেতো স্বাদ পেয়েছিল আর্জেন্টিনা। ১৯৭৪ সালে জার্মানির গেলসেনকেইশেনে ৪-০ গোলে জেতে নেদারল্যান্ডস। সেবার বৈশ্বিক আসরে প্রথমবার ফাইনাল খেলে পশ্চিম জার্মানির কাছে হেরে যায় ডাচরা।
১৯৭৮ সালের আসরে আবারও দেখা হয় আর্জেন্টিনা-নেদারল্যান্ডসের। ফাইনাল ম্যাচে ৩-১ গোলের দারুণ জয়ে সেবার নিজেদের প্রথম শিরোপা ঘরে তোলে লাতিন আমেরিকার দলটি। ১৯৯৮ সালে বৈশ্বিক আসরে আর্জেন্টিনাকে ২-১ গোলে হারায় নেদারল্যান্ডস। ২০০৬ সালে ফ্রাঙ্কফুর্টে গোলশূন্য ড্র হয় তাদের ম্যাচ। ২০১৪ আসরে সাও পাওলোর সেমি-ফাইনালে গোলশূন্য ড্রয়ের পর টাইব্রেকারে ৪-২ ব্যবধানে জেতে আর্জেন্টিনা।
সবশেষ ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ থেকে বাদ পড়ার পর টানা ১৯ ম্যাচে অপরাজিত নেদারল্যান্ডস। আর্জেন্টিনার ৩৬ ম্যাচের অপরাজেয় পথচলা থামায় সৌদি আরব। বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে হারের পর ঘুরে দাঁড়িয়ে টানা তিন ম্যাচ জিতে কোয়ার্টার-ফাইনালে লিওনেল মেসির দল। ১৯৮৬ সালে নিজেদের দ্বিতীয় ও সবশেষ বিশ্ব সেরার ট্রফি ঘরে তোলে আর্জেন্টিনা। সেবার ফাইনালে তারা পশ্চিম জার্মানিকে হারায় ৩-২ গোলে।