সিরিজ জয়ের আশা বাঁচিয়ে রাখতে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে জিততেই হতো বাংলাদেশকে। সেই চ্যালেঞ্জে তারা পায় ৩২৭ রানের লক্ষ্য। মিরপুরের উইকেট বিবেচনায় যা প্রায় অসম্ভব কাজ। দলের ব্যাটিংয়েও ছিল না তার ছাপ। তবু তামিম ইকবাল বললেন, লক্ষ্য ৪০০ রানের হলেও জয়ের চেষ্টা করত তার দল।
শের-ই বাংলায় শুক্রবারের ম্যাচে বিশাল লক্ষ্য তাড়ায় স্রেফ ৯ রানের মধ্যে ড্রেসিং রুমে ফিরে যান বাংলাদেশের ৩ ব্যাটসম্যান। শুরুর ধাক্কা সামলে জুটি গড়েন তামিম ও সাকিব আল হাসান। তবে তাদের ব্যাটে রানের গতি বাড়েনি। জুটিতে ৭৯ রান করতে দুজন খেলেন ১১১ বল।
৬৫ বলে ৩৫ রান করে তামিম যখন আউট হন, ততক্ষণে ওভারপ্রতি প্রয়োজনীয় রান উঠে যায় ৮-এর ওপরে। খানিক পর সাকিব ৬৯ বলে ৫৮ রান করে ফিরে গেলে তা ঠেকে ওভারপ্রতি প্রায় সাড়ে ৯ রানে। পরে অবশ্য দুইশ রানও পেরোতে পারেনি দল। মিলেছে ১৩২ রানের বড় পরাজয়।
ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে তামিম পরিষ্কার করেন, লক্ষ্য বিশাল হলেও তার দল কখনও সম্মানজনক পরাজয়ের কথা চিন্তা করেনি। বরং ৯ রানে ৩ উইকেট পড়ার পরও সাকিবকে নিয়ে জয়ের কথাই ভাবছিলেন তিনি।
“আজ থেকে ১০-১৫ বছর আগে আমরা যদি এই পরিস্থিতিতে থাকতাম, তাহলে হয়তো এরকম ৩-৪ উইকেট পড়ার পর আমরা একটা সম্মানজনক স্কোরের কথা চিন্তা করতাম। যখন আমি ও সাকিব ব্যাটিং করছিলাম, আমরা জেতার জন্যই চিন্তা করছিলাম।”
মুখে জয়ের ভাবনার কথা বললেও তামিমের ব্যাটিংয়ে সেই তাড়না দেখা যায়নি। শুরুর ধাক্কা সামলে ৩১ বলে ২৩ রান করার পর আরও ধীর হয়ে পড়েন তিনি, আউট হওয়ার আগে পরের ৩৪ বলে স্রেফ ১১ রান করেন। এরও ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।
“কখনও কখনও আপনাকে (ইনিংস) পুনর্গঠনের দিকে মন দিতে হবে। যখন এত দ্রুত ৩টা উইকেট পড়ে যাবে, আপনার একটু সময় নিতে হবে। এই কারণেই কিন্তু আমার ওই শটটা খেলা বা ওর (সাকিব) ওই শটটা খেলা। কারণ আমরা চাচ্ছিলাম যতটুকু এগোতে পারি।”
“যদি ৩ উইকেট পড়ার পর হার মেনে নিতাম, তাহলে খেলাটা অন্যরকম হতো যে সবাই আস্তে আস্তে খেলছে। ওরা যদি ৪০০ রানও করত, আমরা চেষ্টা করতাম। পারি না পারি সেটা ভিন্ন বিষয়। আমি ও সাকিব যতক্ষণ ব্যাটিং করেছি, আমরা চেষ্টা চালিয়েছি। তবে এত বড় লক্ষ্য তাড়া করতে ৩০-৩৫ বা ৫০ রান যথেষ্ট নয়।”
ভারতের বিপক্ষে আগের সিরিজেও টপঅর্ডার থেকে তেমন রান পায়নি বাংলাদেশ। শুরুর ব্যাটসম্যানদের এই ব্যর্থতার চেয়ে থিতু হওয়া ব্যাটসম্যানের ইনিংস বড় করতে না পারার বিষয়টিই বেশি ভাবাচ্ছে তামিমকে।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে ভালো শুরুর পরও তামিম থামেন ২৩ রানে। ফিফটি পেরিয়ে ৫৮ রানের বেশি করতে পারেননি নাজমুল হোসেন শান্ত। মাহমুদউল্লাহও কাটা পড়েন ৩১ রানে।
অভিন্ন চিত্র দ্বিতীয় ম্যাচেও। সাকিব ফিফটি করলেও বড় হয়নি ইনিংস। তামিমের পর মাহমুদউল্লাহ বা আফিফ হোসেনরাও ভালো শুরু পেয়ে ২০-৩০ রানের ঘরে আটকা পড়েন। ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানদের সঙ্গে এই জায়গায়ই নিজেদের পার্থক্য দেখছেন তামিম।
“আমি যে জিনিসটা নিয়ে বেশি চিন্তিত, আপনি তাড়াতাড়ি আউট হয়ে যেতে পারেন, এটি খেলারই অংশ। কিন্তু আপনি যখন উইকেটে থিতু হয়েছেন, ৩০-৪০ রান করে ফেলেছেন, তখন আপনাকে বড় ইনিংস খেলতে হবে।”
“এই জিনিসটা দুই ম্যাচেই ওরা করেছে। আজকে একজন ১৩০ (জেসন রয় ১৩২) করেছে, আগের ম্যাচে একজন অপরাজিত ১২০-র (দাভিদ মালান ১১৪) মতো করেছিল। এই জায়গায় আমাদের ঘাটতি আছে। উইকেটে থিতু হলে বড় ইনিংস খেলতে হবে। যেটা ওরা পারলেও আমরা পারিনি।”
© 2023 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh