গত
ডিসেম্বরে বিশ্বকাপ জয়ের পর আর্জেন্টাইন ফুটবলার
রদ্রিগো দি পল নিজেদের
দলটিকেই আর্জেন্টিনার ইতিহাসের ‘সেরা জাতীয় দল’ বলেছিলেন। বিশ্বকাপ জয়ের আবেগ তখন টগবগ করে ফুটছে, সেই আবেগ থেকেই হয়তো লিওনেল মেসির দলকে ডিয়েগো ম্যারাডোনার ’৮৬ বিশ্বকাপের শিরোপাজয়ী
দল কিংবা দানিয়েল প্যাসারেলা, মারিও কেম্পেসদের ’৭৮ বিশ্বকাপজয়ী দলের
চেয়ে এগিয়ে রেখেছিলেন দি পল। তবে
৩৬ বছর পর বিশ্বকাপ জয়ের
প্রাথমিক আবেগ-উচ্ছ্বাস যখন অনেকটাই স্থিমিত, তখন এ নিয়ে নিজের
মতামত দিলেন কোচ লিওনেল স্কালোনি।
১৮
ডিসেম্বর ফ্রান্সের বিপক্ষে বিশ্বকাপের সেই শ্বাসরুদ্ধকর ফাইনাল জেতার পর এই প্রথম
আন্তর্জাতিক ফুটবলে ফিরছে আর্জেন্টিনা, ফিরছেন মেসি-দি মারিয়া-আলভারেজ-এনজো ফার্নান্দেজরা। প্রতিপক্ষ খুব শক্তিশালী কেউ নয়, উত্তর আমেরিকার দেশ পানামা। যে দেশ ফুটবলীয়
নৈপুণ্যের চেয়েও স্বৈরশাসক জেনারেল ম্যানুয়েল নরিয়েগার কারণে বিখ্যাত।
এমন
একটি দেশের বিপক্ষে বিশ্বকাপজয়ী আর্জেন্টিনার ফিফা প্রীতি ম্যাচ মানে আর কিছুই নয়,
দেশের মাটিতে জাতীয় দলের হয়ে মেসি-দি মারিয়াদের আনন্দময়
পুনর্মিলনী। আর্জেন্টাইন খেলোয়াড়েরাও যে ব্যাপারটি সেভাবেই
দেখছেন, তা বোঝা যাচ্ছে
দলের অনুশীলন সেশনগুলোতেই। অনেকটা পুনর্মিলনীর আমেজেই অনুশীলন করছেন তাঁরা। পিএসজি শিবিরে তিন মাস ধরে কঠিন সময় কাটানো মেসিকে মনে হচ্ছে যেন হাঁপ ছেড়ে বেঁচেছেন আর্জেন্টিনা দলে ফিরতে পেরে।
এ
ম্যাচের আগে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে স্কালোনির দিকে ছুটে গিয়েছিল প্রশ্ন—আর্জেন্টিনার ইতিহাসের সেরা জাতীয় দল কি মেসিদের
দলটিই? মেসিরা কি এগিয়ে আছেন
ম্যারাডোনা, প্যাসারেলার অন্য দুটি বিশ্বকাপজয়ী দল থেকেও? স্কালোনি
কিছুটা বিরক্ত এমন প্রশ্নে। তাঁর অধীনই আরাধ্য বিশ্বকাপ শিরোপার নাগাল পেয়েছে আর্জেন্টিনা। উৎসব ও আনন্দের এ
সময়ে এমন প্রশ্নই বরং অপ্রাসঙ্গিক মনে হচ্ছে তাঁর কাছে। কী এসে যায়
সেরা হিসেবে স্বীকৃতি পেলে অথবা না পেলে! কাজের
কাজটা তো ঠিকই করেছেন
তাঁরা। আর্জেন্টিনাকে উপহার দিয়েছেন একটি বিশ্বকাপ শিরোপা।
সংবাদ
সম্মেলনে স্কালোনি সে কথাই বলেছেন,
‘আমার চোখে এ বিতর্কই অপ্রাসঙ্গিক,
অপ্রয়োজনীয়। সবাই আর্জেন্টিনার জার্সি পরে খেলেছে। তিনটি দল বিশ্বকাপ জিতেছে।
কে সেরা, কে সেরা নয়—এতে কার কী আসে যায়!
আমি তো মনে করি,
আমাদের বিশ্বকাপ জয়ের এই আনন্দময় সময়ে
এ তুলনাই অপ্রয়োজনীয়। কে বড়, কে
ছোট—এসব বিতর্ক করে লাভ নেই। আমাকে যদি বেছে নিতে বলেন, কে সেরা, আমি
তিন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন দলকেই বাছব। কেউ কারও চেয়ে কম নয়।’