কোপা আমেরিকা জয়ের পর আর্জেন্টিনার খেলোয়াড়দের বিরুদ্ধে বর্ণবাদী গান গাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ফ্রান্সের ফুটবলারদের নিয়ে আর্জেন্টিনার খেলোয়াড়দের ‘বর্ণবাদী ও বৈষম্যমূলক’ গানের ভিডিও নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে ফিফা।
ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির পক্ষ থেকে এক মুখপাত্র বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটি সম্পর্কে ফিফা অবগত রয়েছে। এ ঘটনার তদন্ত করা হচ্ছে। খেলোয়াড়, সমর্থক কিংবা অফিশিয়ালদের যেকোনো প্রকার বৈষম্যমূলক আচরণের কঠোর নিন্দা জানাচ্ছে ফিফা।’
যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় কলম্বিয়াকে ১-০ গোলে হারিয়ে কোপা আমেরিকার শিরোপা ধরে রাখে আর্জেন্টিনা। ফাইনাল শেষে উদযাপনের এক পর্যায়ে আর্জেন্টাইন ফুটবলাররা গান গাইতে শুরু করে। যেখানে লক্ষ্যবস্তু হয়ে ওঠে ফ্রান্স দল।
এনজো ফার্নান্দেজের করা এক লাইভ ভিডিওতে ফ্রান্সকে ঘিরে বর্ণবাদী মন্তব্য করতে শোনা যায় আর্জেন্টিনার খেলোয়াড়দের। সতীর্থরা বর্ণবাদী গান শুরু করার পরপরই লাইভ বন্ধ করে দেন তিনি। ফ্রান্সের তারকা স্ট্রাইকার কিলিয়ান এমবাপ্পে ছিলেন এই গানের মূল লক্ষ্যবস্তু, যেখানে বর্ণবাদী মন্তব্যও করা হয়। এ নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ করার কথা জানিয়েছিলো ফরাসি ফুটবল ফেডারেশন (এফএফএফ)।
এনজোর ওই ভিডিও নিয়ে নেট দুনিয়ায় তুমুল তোলপাড় শুরু হলে তা সরিয়ে ফেলে ক্ষমা চান তিনি। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেছিলেন, ‘প্রচণ্ড অপমানজনক ভাষা ছিল ওই গানে। ওসব কথার জন্য অজুহাত চলে না। আমি সব ধরনের বৈষম্যের বিরুদ্ধে এবং আমাদের উদযাপনের উন্মাদনায় পড়ে ওরকম করে ফেলার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করছি।’
তবে এতে কাজ হয়নি। তার বিরুদ্ধে অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলামূলক প্রক্রিয়া শুরু করা জানায় তার ক্লাব চেলসি। ইংলিশ ক্লাবটির পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘যেকোনো ধরনের বৈষম্যমূলক আচরণকে অগ্রহণযোগ্য বলে মনে করে চেলসি। খেলোয়াড়ের ক্ষমা চাওয়াকে আমরা প্রশংসার চোখে দেখি এবং এটাকে সচেতন করে তোলার সুযোগ হিসেবে দেখা হবে।’
ঘটনার দিনই ফিফার কারছে আর্জেন্টাইনদের বিরুদ্ধে বৈষম্যমূলক এবং অগ্রহণযোগ্য বর্ণবাদী আচরণের কঠোর নিন্দা জানিয়েছে ফিফার কাছে নালিশ করেন এফএফএফ সভাপতি ফিলিপ দিয়ালো। এরপরই তদন্তে নামে ফিফা।
এদিকে ভিডিওটির প্রসঙ্গে টেনে আর্জেন্টিনা অলিম্পিক দলের কোচ এবং বার্সেলোনা-লিভারপুলের সাবেক তারকা ফুটবলার মাশ্চরানো বলেন, ‘আমরা আর্জেন্টাইনরা আর যাই হোক অন্তত বর্ণবাদী নই। আমি এনজোকে চিনি। দারুণ মানুষ। তার এমন কোনো সমস্যা নেই।
তিনি আরও বলেন, ‘উদ্যাপনের অংশ হিসেবে একটি ভিডিওর অংশ অপ্রাসঙ্গিকভাবে উঠে এসেছে। দেশ হিসেবে আমাদের অন্তত অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যাপারটি আছে। পৃথিবীর নানা প্রান্তের মানুষ আর্জেন্টিনায় বাস করে। তাদের সঙ্গে যে ব্যবহার করা উচিত, আমরা সেটাই করি।’