বাংলাদেশে বিগত দেড় যুগের বেশি সময় ধরে সবচেয়ে আলোচিত ক্রিকেটারের নাম সাকিব আল হাসান। এতদিন ক্রিকেট, ব্যাক্তিগত জীবন ইত্যাদি নিয়ে আলোচনায় থাকলেও সম্প্রতি তার নামে হত্যা মামলা হওয়ায় এই আলোচনার ভার আরও প্রবল হয়ে উঠেছে।
দেশব্যাপী আপামর ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশত্যাগ করে পালিয়ে যান। এতে ভেঙে দেওয়া হয় সংসদ। জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক সাকিব আল হাসান এই সদ্য বিলুপ্ত সংসদের সংসদ সদস্য ছিলেন। সরকার পতন হওয়ার পর সারাদেশে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতা-কর্মী, সংসদ সদস্য, মন্ত্রী এদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মামলার হিড়িক পড়ে যায়। এর মধ্যে বেশিরভাগই ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের কেন্দ্র করে হত্যা মামলা। এমনই একটি হত্যা মামলার আসামী হয়ে বিপাকে সাকিব।
গত বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) গার্মেন্টসকর্মী রুবেলকে হত্যার অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেন তার বাবা রফিকুল ইসলাম। মামলার এজাহারে ২৮ নম্বর আসামি করা হয় সাকিব আল হাসানকে। আর এখানেই বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) দোটানা। তবে অবশেষে সাকিব বিষয়ে সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছে বিসিবি।
বিসিবি গতকাল (২৭ আগস্ট) ঘোষণা করেছে যে অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান সাম্প্রতিক বাংলাদেশের সাম্প্রতিক অস্থিরতার সময় একটি খুনের মামলায় নাম উঠে এলেও জাতীয় দলের হয়ে খেলা চালিয়ে যাবেন।
রাওয়ালপিন্ডিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম টেস্টের পর সাকিবের ভবিষ্যৎ অংশগ্রহণ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে আগেই জানিয়েছিল বিসিবি। তবে, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শাজিব মাহমুদ আলমের মাধ্যমে অ্যাডভোকেট মো. রফিনুর রহমানের পাঠানো আইনি নোটিশে সাকিবকে অবিলম্বে সব ধরনের ক্রিকেট থেকে অপসারণের অনুরোধ করা হয়েছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিসিবি নিশ্চিত করেছে যে সাকিব দলেই থাকছেন।
আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী, সাকিবের নাম খুনের মামলায় ওঠায় তিনি জাতীয় দলে থাকতে পারেন না। এতে সাকিবকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনার দাবি জানানো হয়, যাতে তদন্ত ত্বরান্বিত করা যায় এবং আইসিসিকে এ বিষয়ে জানানো হয়।
তবে বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, ‘সাকিব খেলা চালিয়ে যাবেন। এফআইআর প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে, এবং অপরাধ প্রমাণ না হওয়া পর্যন্ত তিনি খেলতে পারবেন। পাকিস্তান সিরিজের পর ভারত সফরেও তাকে দলের সঙ্গে রাখা হবে।’
বিসিবি সাকিবের জন্য প্রয়োজনীয় হলে আইনি সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।