রাওয়ালপিন্ডিতে ৩য় টেস্টে পাকিস্তান অধিনায়ক শান মাসুদ নতুন বলের জন্য ডেকেছেন দুই অফ-স্পিনার সাজিদ খান এবং নোমান আলীকে। হয়তো ক্যাপ্টেনের আস্থাও ছিল তাদের উপর। আর সে আস্থার প্রতিদানও মিলেছে। প্রথম ইনিংসে টানা ৪২ ওভার বোলিং করেছেন তারা দু’জন। যা টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসে চতুর্থ এবং পাকিস্তানের মাটিতে প্রথম ঘটনা।
পুরো খেলা জুড়ে দুই স্পিনারের বোলিং দাপটে দাঁড়াতে পারেনি ইংল্যান্ড। মাত্র ১১০ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে ইংলিশরা। উদ্বোধনী জুটিতে ৫৬ রান সংগ্রহ করেন ইংলিশ ওপেনার জ্যাক ক্রলি ও বেন ডাকেট। এরপর নোমান ও সাজিদ খেলা তাদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসেন। অলি পোপ ৩, হ্যারি ব্রুক ও জো রুট ৫ রান করে ফিরে যান সাজঘরে। খানিক বাদে অধিনায়ক বেন স্টোকসও ১২ রান তুলে একই পথে হাঁটা ধরেন।
সাজিদ খান ৬ উইকেট নিয়ে ১৩০ রান দেন, এটি রাওয়ালপিন্ডিতে টেস্ট ক্রিকেটে তৃতীয় সেরা বোলিং পারফরম্যান্স হিসেবে দাঁড়িয়েছে। পুরো ইনিংসে শান মাসুদ কোনো পেসার ব্যবহার করেননি, যা টেস্ট ইতিহাসে তৃতীয়বারের মতো ঘটল।
অবশ্য, গাস অ্যাটকিনসন এবং জেসন স্মিথ ৭ তম উইকেটে একটি দুর্দান্ত জুটি গড়েছিলেন, একসাথে করেন ১০৭ রান।
এক পর্যায়ে জাহিদ মেহমুদ ও সালমান আগাকে বোলিংয়ে আনেন পাক ক্যাপ্টেন। অ্যাটকিনসনের উইকেট নিয়ে তাদের পার্টনারশিপকে বাধাগ্রস্ত করে নোমান। তার হাত ধরে জাহিদ তুলে নেয় জেসন স্মিথের উইকেট। যাওয়ার আগে অবশ্য নিজের ঝুলিতে ৮৯ রান তুলে নেন ইংলিশ এই উইকেটরক্ষক।
জাহিদের পরেই উইকেটের তালিকায় নোমান ও সাজিদের নাম উঠে এসেছে। শেষ পর্যন্ত, ইংল্যান্ড মোট ২৬৭ রানে গুটিয়ে যায়।
পাকিস্তান ক্রিকেটের ইতিহাসে এটি দশমবারের মতো স্পিনাররা প্রথম ইনিংসে প্রতিপক্ষের সব উইকেট নিয়েছে, আর ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে এমন ঘটনা ঘটেছে ৪ বার। শেষ পর্যন্ত ইংল্যান্ড অলআউট হয় ২৬৭ রানে, যা পাকিস্তানের স্পিন বোলিংয়ের শক্তিমত্তার প্রমাণ।
টেস্টে নতুন বলে দুই স্পিনারের বোলিং-
১. এম জে জয়সিমহা - সালিম আজিজ দুরানি; প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ড (১৯৬৪ সাল)
২. আব্দুর রাজ্জাক - মেহেদি হাসান মিরাজ; প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা (২০১৮ সাল)
৩. তাইজুল ইসলাম - সাকিব আল হাসান; প্রতিপক্ষ আফগানিস্তান (২০১৯ সাল)
৪. সাজিদ খান - নোমান আলী; প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ড (২০২৪ সাল)
এই ম্যাচে পাকিস্তান স্পিনের দাপটে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে নতুন এক ইতিহাস তৈরি করেছে