আজ (৬ নভেম্বর) বাংলাদেশ বনাম আফগানিস্তান তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় আফগানরা। সংযুক্ত আরব আমিরাতের শারজাহ স্টেডিয়ামে এদিন স্কোয়াডে তিন পেসার নিয়ে খেলছে বাংলাদেশ।

ম্যাচের দ্বিতীয় ওভারেই দারুণ এক আউট স্যুইংয়ে আফগান ওপেনার রহনাতুল্লাহ গুরবাজকে পরাস্ত করেন তাসকিন আহমেদ। অফ স্টাম্পের অনেক বাইরে দিয়ে যাওয়া তাসকিনের ফুল লেন্থ ডেলিভারির  বলে ড্রাইভ খেলতে গিয়ে কিপার মুশফিকের হাতে ধরা পড়েন রহমানুল্লাহ গুরবাজ। 

অষ্টম ওভারের দ্বিতীয় বলেই আবারও আফগান দুর্গে টাইগার পেসারদের আঘাত। এবার মুস্তাফিজ ম্যাজিকে পরাস্ত রহমত শাহ। কিছু বুঝে ওঠার আগেই ব্যাটের কানায় ছুঁয়ে বল চলে যায় মুশির বিশ্বস্ত গ্লাভসে।দশম ওভারে মারাত্মক এক ইনসুইঙ্গারে সিদিকুল্লাহ আতাল এলবিডব্লিউর শিকার হয়ে ফিরে গেলে ক্রিজে আসেন আজমাতুল্লাহ ওমারজাই। তবে তিনি টিকেছেন মোটে তিন বল। ডাক মেরে বিদায় হওয়ার আগে একই ফরম্যাটে বলে খোঁচা মেরে মুশফিকের হাতে পৌঁছে দেন ওমারজাই। 

ফিজ ম্যাজিকে আফগান টপ অর্ডারে ধ্বস নামার পর ক্যাপ্টেন হাশমতউল্লাহ শহিদিকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন হার্ডহিটার গুলবাদিন নাইব। ৩৫ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে সাবধানে খেলছিল অভিজ্ঞ এই দুই ব্যাটার। বাজে বলকে বাউন্ডারি লাইনে পাঠিয়ে ধীরে ধীরে গড়ে তুলছিল সুন্দর একটি পার্টনারশিপ। তবে এদিন শুরু থেকেই টাইগার পেসারদের সামলাতে হিমশিম খাচ্ছিল আফগানরা। তাই হাশমতউল্লাহ আর গুলবাদিনের পার্টনারশিপ বেশিদুর এগুতে পারেনি। তাসকিনের শর্ট বলে গুলবাদিন সজোরে ব্যাট চালালে শর্ট মিড উইকেটে আরামসে ক্যাচ লুফে নেন তানজিদ হাসান তামিম। 

টাইগার পেসারদের দাপটে ৭১ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে আফগানিস্তান। চারে নেমে হাশমতুল্লাহ শহিদি একপাশ ধরে রেখে খেলছিলেন। গুলবাদিনের বিদায়ের পরে দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ প্লেয়ার মোহাম্মদ নবীকে নিয়ে গড়েন  শতরানের পার্টনারশিপ। মোহাম্মদ নবী এদিন বিশাল দুটি ছক্কায় বল স্টেডিয়ামের বাইরে পাঠান। হাশমতুল্লাহ কিন্তু দেখেশুনে খেলছিলেন। আফগান ভক্তরা যখন বড় সংগ্রহের স্বপ্ন দেখছিল তখন আবারও  দুঃস্বপ্নের মত হানা দেয় মুস্তাজির রহমান। অর্ধশতক পূরণ করার কিছুক্ষন পরেই ফিজের বলে বোল্ড হয়ে গেলে ভেঙে যায় ১০৪ রানের পার্টনারশিপ।

এরপর মোহাম্মদ নবি একাই লড়াই চালিয়ে যেতে থাকেন। কিছুক্ষণ পর রশিদ খান ১০ রান করে আউট হন। মিতব্যায়ী বোলিংয়ে ম্যাচে নিজের একমাত্র উইকেটটি তুলে নেন শরীফুল। 

ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকবে মোহাম্মদ নবীর ইনিংসটি। সুদীর্ঘ ক্যারিয়ারের ১৭ তম ফিফটি তুলে নিয়ে এগুচ্ছিলেন সেঞ্চুরির পথে। কিন্তু তাসকিনের বলে বিগশট খেলতে গিয়ে টাইমিং মিস করেন তিনি। ডিপ ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগে সহজ ক্যাচটি মিস করেননি তানজিদ হাসান তামিম। ১৬ রানের জন্য সেঞ্চুরি মিস করেন নবি। 

নবিকে আউট করার পরের বলেই মিডল স্টাম্প উপড়ে দিয়ে  এএম গজানফরকে গোল্ডেন ডাক উপহার দেন তাসকিন।  পরপর দুই বলে দুই উইকেট নিয়ে হ্যাট্রিক মিস করার এক বল পরেই ফারুকিকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলে আফগান ইনিংসের সমাপ্তি প্রায় টেনেই দিয়েছিলেন তাসকিন। সঙ্গে তুলে নিয়েছিলেন ফাইফার। 

কিন্তু বাধ সাধে আফগানদের রিভিউ। রিভিউ তে দেখা যায় বলটি স্টাম্পের অনেক বাইরে দিয়ে বেরিয়ে গেছে। 

২১৯ রানেই থেমে গিয়েছিল আফগানদের ইনিংস। তবে শেষদিকে বোলার নাঙ্গেলিয়া খারোতের আপ্রাণ চেষ্টায় ২৩৫ রান তুলতে সক্ষম হয় আফগানিস্তান। দুটি চারের সাথে একটি ছক্কা ছিল তার ইনিংসে। তবে তার দ্রুততার সাথে নেওয়া বেশ কিছু ডাবল সবার নজড় কেড়েছে। ৫০ তম ওভারের শেষ বলে শেষ পর্যন্ত ফারুকি আউট হয়ে গেলেও ২৭ রানে অপরাজিত থাকেন  খারোতে।

টাইগার বোলারদের হয়ে সমান চারটি করে উইকেট নেন তাসকিন ও মুস্তাফিজ। শরীফুলের ঝুলিতে ওঠে একটি উইকেট। 

২৩৬ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমেছে টাইগাররা।