ছবিঃ সংগৃহীত।
আজ (১০ ডিসেম্বর) ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ বাঁচানোর ম্যাচে টসে হেরে প্রথমে ব্যাট করেছে বাংলাদেশ। ব্যাটিং অর্ডারে ধ্বস নামার এ এদিনে তানজিম সাকিব-মাহমুদুল্লাহর রেকর্ড জুটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ২২৮ রানের টার্গেট দিয়েছে টাইগাররা।
স্কোরবোর্ডে রান ৬৪ তুলতেই টপ অর্ডারের চার ব্যাটার প্যাভিলিয়নে। যেখানে তানজিদের ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে ৩০০পেরোনো সংগ্রহের স্বপ্ন দেখছিলো টাইগার সমর্থকরা সেখানে সবাইকে হতাশ করে তামিম বাদে টপ অর্ডারের সবাই ধরাশায়ী।
সেন্ট কিটসের বাসেটেরের ওয়ার্নার পার্কে আজ দলীয় ২৬ রান প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। জেইডেন সিলসের বলে মোতির হাতে ক্যাচ তুলে ব্যক্তিগত মাত্র ২ রানে বিদায় হন সৌম্য সরকার।
তিনে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই ব্যাটে বলে এক করতে পারছিলেন না লিটন। প্রথম ম্যাচের মত এদিনও ব্যাট হাতে ব্যর্থ লিটন ক্রিজে থিতু হবার চেষ্টায় ১৯ বল খেলে মাত্র চার করেন তিনি। এক পর্যায়ে রান না তুলতে পারার চাপে সিলসের শর্ট বলে পুল করতে গিয়ে ব্যাটে বলে এক করতে পারেননি তিনি। ফলাফল বল উল্টো গালি অঞ্চলে লুইসের হাতে ধরা পরে। এই ম্যাচেও ব্যর্থ লিটনের ফর্ম টানা খারাপই যাচ্ছে।
লিটনের বিদায়ের পরে ক্রিজে আসেন মেহেদি হাসান মিরাজ। ব্যাটিং পাওয়ারপ্লে শেষ হওয়ার মাত্র এক বল আগে জেইডেন সিলসের চমৎকার এক ইনসুইঙ্গারে পুরোপুরি বোকা বনে যান মিরাজ। অফ স্টাম্পের বাইরে দিয়ে বেরিয়ে যাবে ভেবে যে বল ছেড়ে দিয়ছিলেন সেটি সরাসরি স্টাম্পে গিয়ে আঘাত হানে। আগের দিন ৭৪ রানের ইনিংস খেলা মিরাজকে এদিন ফিরতে হয় ১ রান করেই।
পাওয়ারপ্লের ১০ ওভারে বাংলাদেশ ৫৫ রান তুলতেই হারায় তিন উইকেট। তিন উইকেটের তিনটিই নিয়েছেন জেইডেন সিলস।
প্রথম ম্যাচে ঝোড়ো ফিফটির পর এদিনও সেই পথেই এগোচ্ছিলেন তানজিদ হাসান তামিম। অন্য ব্যাটারদের আসা-যাওয়ার মাঝে শুরু থেকেই তামিম মেরে খেলছিলেন। একাদশতম ওভারে টানা দুই চার মেরে পোঁঁছে যান ব্যাক্তিগত ৪৬ রানে। পরের বলেই কভার ড্রাইভ খেলতে গিয়ে ক্যাচ আউট হয়ে ফিরতে হয় এই ওপেনারকে। আউট হওয়ার পর ব্যাটে ঘুঁষি মেরে হতাশা প্রকাশ করতে দেখা যায় তামিমকে। আউট হওয়ার আগে মাত্র ৩৩ বলে ৪টি চার এবং দুই ছক্কায় করেন ৪৬ রান।
প্রথম দিন ব্যাট হাতে ৪৮ করা জাকের আলি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে আজ ব্যর্থ। স্পিনার গুড়াকেশ মোতির বলে এলবিডব্লিউ হয়ে আউট হন মাত্র ৩ রানে।
দলীয় ১১৫ রানে রিশাদ যখন ডাক মেরে প্যাভিলিয়নে, ক্রিজে তখন একমাত্র স্বীকৃত ব্যাটার মাহমুদুল্লাহ। বয়স ৩৯ হতে বাকি আছে ৫৫ দিন। তানজিম সাকিবকে নিয়ে ১০৬ বলে ৯২ রানের এক পার্টনারশিপ খেলে দলকে নিয়ে গেলেন একটা সম্মানজনক পর্যায়ে। ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৩১তম ফিফটি করার পথে মাহমুদুল্লাহ ১টি বাউন্ডারি মারলেও ছক্কা হাঁকিয়েছেন তিনটি। এটিই ওয়ানডেতে অষ্টম উইকেট জুটিতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ পার্টনারশিপ।
আরও একবার মাহমুদুল্লাহ’র বুড়ো হাড়ের ভেলকিতে লজ্জা এড়িয়েছে বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টানা দুই ফিফটি করে আরও একবার দলকে খাদের কিনারা থেকে নিয়ে লড়াই করার পুঁজি এনে দিতে লড়েছেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ।
১৭ বছরের লম্বা ওয়ানডে ক্যারিয়ারের বেশির ভাগ সময়টাই পার করেছেন দলকে ব্যাটিং বিপর্যয়ের হাত থেকে টেনে তুলে সম্মানজনক একটা স্কোর অথবা লড়াই করার মত সংগ্রহ দাঁড় করিয়ে। ম্যাচ জিতিয়েও মাঠ ছেড়েছেন কখনো কখনো। যেখানে এখনও দলে তার উপস্থিতি নিয়ে সমালোচনা হয় সেখানে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টানা দুই ফিফটিতে জানিয়ে দিলেন বাংলাদেশের কেন তাকে এখনও প্রয়োজন।
আরেকদিকে পেস বোলার তানজিম হাসান সাকিব এদিন টপ অর্ডারের ব্যাটারদেরর লজ্জা দিয়ে মাহমুদুল্লাহকে যোগ্য সঙ্গ দিয়ে করেছেন ৬২ বলে ৪৫ রান। রস্টন চেসের যে বলটা সজোরে হাঁকিয়েছিলেন, তাতে চেসের মত লম্বা কেউ লাফিয়ে উঠে ক্যাচ টা না ধরলে হয়তো ওয়ানডে ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটিটা তুলে নিতে পারতেন তানজিম সাকিব। এটাই ওয়ানডেতে তার সর্বোচ্চ রান। এর আগের সর্বোচ্চ ছিল ১৮ রান।
তানজিম সাকিবের বিদায়ের পর মাহমুদুল্লাহর ইনিংস থামে ৬২ রানে। সিলসের বলে ধরাশায়ী হওয়ার আগে বলকে সীমানা ছাড়া করেছেন ছয়বার। এরমধ্যে ৪টিই বিশাল ছক্কা।
শেষদিকে শরীফুলের ১৫ রানে দল পায় ২২৭ রানের পুঁজি। বাংলাদেশের ইনিংস ৪৫.৫ ওভারেই থেমে যায়।
ক্যারিবিয়দের হয়ে এদিন সবচেয়ে সফল বোলার জেইডেন সিলস। ২২ রানে নিয়েছেন ৪ উইকেট। টপ অর্ডারে ধ্বস নামানোর সাথে সাথে এদিন চতুর বোলিংয়ে মাহমুদুল্লাহকে ৬২ রানে না থামালে হয়তো বাংলাদেশের স্কোরটা আরও বড় হতে পারত।
মিতব্যায়ী বোলিংয়ে ৩৬ রান দিয়ে ২ উইকেট নিয়েছেন স্পিনার গুড়াকেশ মোতি।
বিষয় : বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh