ছবিঃ সংগৃহীত।
আজ (১৮ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৩ ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে দুর্দান্ত বোলিং নৈপুণ্যে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ২৭ রানে হারিয়েছে টাইগাররা। এই ম্যাচ জিতে এক ম্যাচ হাতে রেখেই টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয় নিশ্চিত করল বাংলাদেশ।
ব্যাট হাতে
প্রথম ম্যাচে টাইগার টপ অর্ডারের তিন ব্যাটার ব্যর্থ হলেও সৌম্যর ৪৩, এবং মিডল অর্ডারে
জাকের আলি৪ ২৭ বলে ২৭ রান, শেখ মেহেদির অপরাজিত ২৬ এবং শেষের দিকে শামীম হোসেনের ৩
ছক্কায় ১৩ বলে ২৭ রানে ভর করে ১৪৭ রানের পুঁজি পেয়েছিল বাংলাদেশ। তবে আজকের ম্যাচে
হানা দিয়েছে চিরাচরিত সেই ব্যাটিং ব্যার্থতা।
এদিন কিংসটাউনের আর্নোস ভেলে স্টেডিয়ামে টসে জিতে টাইগারদের ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান ক্যারিবীয় অধিনায়ক রভম্যান পাওয়েল। আজ বাংলাদেশ একাদশে ছিল একটি পরিবর্তন। আফিফ হোসেনের জায়গায় মূল একাদশে খেলেন মেহেদি হাসান মিরাজ।
ব্যাট হাতে ক্যারিয়ারের দুঃস্বপ্নের সময় কাটাচ্ছেন লিটন দাস। একের পর এক ডাক মেরে আছেন সমালোচনার তুঙ্গে। তাই আজ ব্যাটিং অর্ডারে পরিবর্তন এনে ওপেনিং করেন লিটন। এতে লাভের লাভ কিছুই হয়নি। উলটো ১০ বলে মাত্র ৩ করে আকিল হোসেনের বলে স্ট্যাম্পিংয়ের শিকার হন।
ওপেনিংয়ের
বদলে আজ তিনে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ২ রান করে রস্টন চেসের বলে বোল্ড হন তানজিদ হাসান।
১১ রানে ২
উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে বাংলাদেশ। এরপর সৌম্য আর মিরাজ ৩১ বলে ২৮ রানের জুটি গড়ে দলকে
বিপদ থেকে উদ্ধার করে দলের সংগ্রহ বাড়ানোর উদ্দেশ্যে ব্যাট চালিয়ে খেলার আগেই বিদায়
হন সৌম্য। আগের দিন ৩ ছক্কায় ৪৩ রান করলেও এদিন ১৮ বল খেলে শামুকের গতিতে করেন ১১ রান।
জোসেফের থ্রোতে ফিরেছেন রান আউট হয়ে।
টাইগারদের ব্যাটে এদিন কোনো স্ট্রোকপ্লের ফুলঝুরি দেখা যায়নি। উলটো ম্যাচ বাঁচাতে ধীরগতির ইনিংস খেলেছেন সবাই। ৩টি চার এবং ১টি ছক্কা হাঁকালেও অতিরিক্ত ডট বল খেলায় ২৫ বলে ২৬ রান তুলে বিদায় হন মেহেদি হাসান মিরাজ। এদিন মিরাজকে ফেরান জোসেফ। জোসেফের বলে পুল শটে মিরাজ ছক্কা হাঁকাতে গেলেও শটে ছিল না কোনো প্রাণ। তাই ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগ অঞ্চলে বাউন্ডারি লাইনে ব্রেন্ডন কিং সহজ ক্যাচ লুফে নেন।
ধীরগতির ইনিংস
খেললেও লজ্জ্বার হাত থেকে বাঁচান মেহেদি হাসান মিরাজ।
এরপর গুড়াকেশ
মোতি বোল্ড করে ফিরিয়েছেন রিশাদ হোসেন এবং শেখ মেহেদিকে। রিশাদ মাত্র ৫ রান করলেও ১১
রান করে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেছিল শেখ মেহেদি। তবে মোতির স্পিনে পরাস্ত হতে হয় তাকেও।
জাকের আলিও
এদিন নামের সুবিচার করতে পারেননি। ২০ বল খেলে মাত্র ২১ রান করতে পেরেছেন এই হার্ড হিটার।
জাকেরের বিদায়ে ৮৮ রানে ৭ উইকেটের পতন ঘটলে তখনই টাইগারদের হার দেখে ফেলেছিল সবাই।
তবে ক্রিজে তখন শামীম হোসেন। লম্বা লম্বা সব ছক্কা হাঁকানোয় সুনাম আছে তার। আগের ম্যাচে ৩ ছক্কায় ১৩ বলে ২৭ রান করেছিলেন এই ব্যাটার। এদিন দলকে বিপদ থেকে টেনে তুলে লড়াই করার মত পুঁজি এনে দেন। ২টি চার এবং ২টি ছক্কায় এদিন ১৭ বল খেলে ৩৫ করে অপরাজিত ছিলেন শামীম।
তাকে সঙ্গ
দিয়েছিলেন তানজিম হাসান সাকিব। ১১ বলে ১ টি চারে মাত্র ৯ রান করে অপরাজিত থাকলেও শামীম
হোসেনকে যোগ্য সঙ্গ দেন এই টেল এন্ডার। অষ্টম উইকেট জুটিতে শামিম-তানজিমের ৪১ রানের
জুটির ওপর ভর করে ৭ উইকেট হারিয়ে ১২৯ রানের পুঁজি পায় বাংলাদেশ।
ক্যারিবীয়
বোলারদের মধ্যে ২৫ রান দিয়ে সর্বোচ্চ দু'টি উইকেট শিকার করেছেন গুড়াকেশ মোতি।
১৩০ রানের সহজ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ২ ওভারে ১৯ রান তোলে দুই ওপেনার। তৃতীয় ওভারে তাসকিন আহমেদ ক্যারিবীয় শিবিরে হানেন জোড়া আঘাত। ওপেনার ব্রেন্ডন কিং এবং উইকেট কিপার ব্যাটার ফ্লেচার দু'জনই উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে বিদায় হন।
এবার বল হাতে দৃশ্যপটে আবির্ভাব ঘটে প্রথম দিন ক্যারিবীয় ব্যাটিং শিবিরে একাই ধ্বস নামানো শেখ মেহেদির। জনসন চার্লস ১২ বলে ১৪ রান করে ব্যাট হাতে চোখ রাঙাচ্ছিলেন। চতুর্থ ওভারে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলে চার্লসের ইনিংস আর বড় করতে দেননি শেখ মেহেদি।
ইনিংসের ষষ্ঠ এবং নিজের দ্বিতীয় ওভারে এসেই নিকোলাস পূরাণকে ফিরিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ শিবিরে ত্রাস সৃষ্টি করেন শেখ মেহেদি।
৩২ রানে ৪
উইকেট হারিয়ে যখন খাবি খাচ্ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তখন ক্যারিবীয়দের বিপদ আরও বাড়ান হাসান
মাহমুদ। ক্যাপ্টেন রভম্যান পাওয়েলকে ফিরিয়েছেন মাত্র ৬ রানে।
ইনিংসের নবম
ওভারেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৪২ রানে ৬ উইকেট হারালে দৃশ্যত ম্যাচটা সেখানেই শেষ হয়ে যায়।
এরপর রস্টন চেস এবং আকিল হোসেন ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করলেও দিনটা ছিল টাইগার বোলারদের। ওয়ানডে সিরিজ থেকেই খরুচে বোলিং করা রিশাদ হোসেনও আজ বল হাতে ছিলেন সফল। ৩ ওভারে মাত্র ১২ রান খরচায় তুলে নেন ২ উইকেট। রস্টন চেসকেও ফেরান রিশাদ।
এরপর টাইগারদের জয়ের পথে গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়ানো আকিল হোসেন ইনিংসের ১৯তম ওভারে এসে তাসকিনের বলে পরাস্ত হলে ১০২ রানে থামে ক্যারিবীয়দের ইনিংস।
মাত্র ১২৯
রানের পুঁজি নিয়ে খেলতে নেমেও টাইগারদের দুর্দান্ত বোলিং নৈপুণ্যে ১ ম্যাচ হাতে রেখেই
ছয় বছর পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতল টাইগাররা।
বল হাতে ২টি
করে উইকেট নিয়েছেন শেখ মেহেদি, তানজিম হাসান সাকিব এবং রিশাদ হোসেন। হাসান মাহমুদ পেয়েছেন
১টি উইকেট।
ম্যাচের মোড় ঘোরানো ১৭ বলে অপরাজিত ৩৫ রানের ইনিংস খেলে ম্যাচসেরার পুরস্কার পান শামীম হোসেন।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh