বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) চলমান একাদশ আসরে ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য উদ্বেগের একটি বিষয় উঠে এসেছে। অন্তত আটটি ম্যাচে সন্দেহজনক পারফরম্যান্সের অভিযোগ উঠেছে, যেখানে চারটি ফ্র্যাঞ্চাইজির অন্তর্ভুক্ত ১০ জন ক্রিকেটার নজরদারির আওতায় রয়েছেন। এই তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় দলের ক্রিকেটার এনামুল হক বিজয়ের নামও, যাকে নিয়ে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারির গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে।
বিসিবির এক কর্মকর্তার মতে, এনামুল হক বিজয়কে নিয়ে ইমিগ্রেশন বিভাগে একটি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, "ব্যবস্থা গ্রহণও করা হয়েছে ইতোমধ্যে। তবে এটি সাময়িক, অভিযোগ প্রমাণিত না হলে এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হবে।"
ক্রিকবাজের প্রতিবেদনে জানা যায়, সন্দেহভাজন ক্রিকেটারদের মধ্যে দুর্বার রাজশাহী ও ঢাকা ক্যাপিটালসের হয়ে সর্বোচ্চ ১২ জন খেলছেন। এছাড়া সিলেট স্ট্রাইকার্সের ৬ জন এবং চিটাগাং কিংসের ২ জন ক্রিকেটার রয়েছে নজরদারিতে। যে ম্যাচগুলোতে সন্দেহজনক পারফরম্যান্সের অভিযোগ রয়েছে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য: ফরচুন বরিশাল-দুর্বার রাজশাহী (৬ জানুয়ারি), রংপুর রাইডার্স-ঢাকা ক্যাপিটালস (৭ জানুয়ারি), এবং আরও কয়েকটি ম্যাচ।
বিসিবির অ্যান্টি করাপশন ইউনিট (অ্যাকু) এই বিষয়ে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে। সংস্থার একজন কর্মকর্তা বলেছেন, "তদন্ত চলমান থাকায় আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করা সম্ভব নয়। তবে পুরো তালিকা আমাদের নজরে রয়েছে এবং সেগুলো নিয়ে গভীর পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।" তিনি আরও যোগ করেন, "যদি তদন্তে কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়, তবে কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে। সিদ্ধান্ত হবে দৃষ্টান্তমূলক, যা ক্রিকেটের স্বচ্ছতা বজায় রাখতে সহায়ক হবে।"
অন্যদিকে, দুর্বার রাজশাহীর ফ্র্যাঞ্চাইজি ইতিমধ্যেই পারিশ্রমিক বকেয়া রাখা নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছে। সময়মতো পারিশ্রমিক না পাওয়ার কারণে ক্রিকেটাররা অনুশীলনও বয়কট করেছিলেন। বিজয়কে অধিনায়কত্ব থেকে সরিয়ে তাসকিন আহমেদকে দায়িত্ব দেওয়ার পর এই ফ্র্যাঞ্চাইজির বিরুদ্ধে অভিযোগ আরও জোরালো হয়েছে।
এই ঘটনা বাংলাদেশের ক্রিকেটের স্বচ্ছতা ও নৈতিকতা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে। ক্রিকেট মাঠে ন্যায্য প্রতিযোগিতা এবং বিশ্বাসযোগ্যতা রক্ষা করতে বিসিবি এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। শুধু শাস্তি নয়, এমন ঘটনা প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং সঠিক নীতিমালা প্রণয়নই হতে পারে স্থায়ী সমাধান।