সবখানে জিতে আসার অভ্যাসটা বেশ পুরাতন ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড বিসিসিআইয়ের। খেলার মাঠ হোক কিংবা ক্রিকেট কূটনীতি গেল এক দশকে নিজেদের অবস্থানটা ক্রিকেট বিশ্বে বেশ পোক্ত করেছে ভারত। তবে এবারে তাদের দেখতে হলো মুদ্রার আরও এক পিঠ। নিজ দেশের আদালতের রায়েই হেরে গেল বিসিসিআই।
আইপিএল দল কোচি টাস্কার্স কেরালার চুক্তি বাতিল করায় বিসিসিআইকে ৫৩৮.৮৪ কোটি ভারতীয় রুপি ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ দিয়েছে বোম্বে হাইকোর্ট। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, কোচি ক্রিকেট প্রাইভেট লিমিটেডকে (KCPL) দিতে হবে ৩৮৫.৫০ কোটি রুপি এবং রেনডেভু স্পোর্টস ওয়ার্ল্ডকে (RSW) দিতে হবে ১৫৩.৩৪ কোটি রুপি।
গত মঙ্গলবার আদালত বিসিসিআইয়ের আপত্তি খারিজ করে ২০১৫ সালের মধ্যস্থতাকারী রায়ের পক্ষে রায় দেয়। এই রায় অনুযায়ী বিসিসিআইকে বড় অঙ্কের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে দুই মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের কাছে।
২০১১ সালে নিজেদের ইতিহাসে একমাত্র আইপিএল খেলেছিল কোচি টাস্কার্স কেরালা। সেই মৌসুমে ১০ দলের মধ্যে অষ্টম স্থানে শেষ করেছিল তারা। কিন্তু একই বছরের সেপ্টেম্বরে বিসিসিআই অভিযোগ আনে– দলটি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ব্যাংক গ্যারান্টি জমা দিতে ব্যর্থ হয়েছে, যা চুক্তির শর্ত ভঙ্গের সমান।
এর ফলে বিসিসিআই ফ্র্যাঞ্চাইজিটির চুক্তি বাতিল করে এবং এর পরপরই দুই পক্ষ মধ্যস্থতার জন্য আদালতের দ্বারস্থ হয়। ২০১৫ সালে এক স্বতন্ত্র সালিশি আদালত বিসিসিআইয়ের সিদ্ধান্তকে ভুল বলে রায় দেয় এবং কুচি মালিকপক্ষের পক্ষে রায় প্রদান করে। বিসিসিআই সেই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করে, কিন্তু আদালত তা খারিজ করে দিয়ে আগের মধ্যস্থতা সিদ্ধান্তই বহাল রাখে।
বোম্বে হাইকোর্টের বিচারপতি রিয়াজ আই. চাগলা তার রায়ে বলেন, “আর্বিট্রেশন অ্যাক্টের ৩৪ ধারা অনুযায়ী এই আদালতের এখতিয়ার খুবই সীমিত। বিসিসিআই মূল মামলার বিষয়বস্তুর গভীরে যাওয়ার চেষ্টা করেছে, যা ৩৪ ধারার আওতায় অনুমোদিত নয়। উপস্থাপিত প্রমাণ ও মৌলিক প্রশ্নে রায় নিয়ে বিসিসিআইয়ের অসন্তোষ কোনোভাবেই এই রায় বাতিলের যৌক্তিক ভিত্তি হতে পারে না।”
তিনি আরও বলেন, “মধ্যস্থতাকারীর সিদ্ধান্ত যে বিসিসিআই ভুলভাবে ব্যাংক গ্যারান্টি দাবি করেছে এবং সেটি KCPL-FA চুক্তি লঙ্ঘনের সমান, তা প্রমাণের ভিত্তিতে সঠিক সিদ্ধান্ত। এটি আদালতের হস্তক্ষেপযোগ্য নয়।”
তবে বিসিসিআইকে এখনই ক্ষতিপূরণ দিতে হচ্ছে না। সংস্থাটিকে৩ ৬ সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়েছে আপিল করার জন্য।