ফিফা র্যাংকিংয়ে ৭৩ ধাপ এগিয়ে থাকা মিয়ানমার চোখ রাঙিয়েছিল বাংলাদেশকে। ৭ বছর আগে ইয়াঙ্গুনে অলিম্পিক বাছাই ফুটবলে বাংলাদেশের জালে গুনেগুনে ৫ গোল দিয়েছিল মিয়ানমারের মেয়েরা। শক্তি, অতীত রেকর্ডে বাংলাদেশের চেয়ে অনেক এগিয়ে দলটি।
সেই মিয়ানমারকে তাদেরই মাটিতে হারিয়ে ইতিহাসের দ্বারপ্রান্তে বাংলাদেশ। আজ (বুধবার) ইয়াংগুনে এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে ঋতুপর্ণা চাকমারা ২-১ গোলে হারিয়েছে শক্তিশালী মিয়ানমারকে।
এই জয়ে গ্রুপ শীর্ষে বাংলাদেশ। শেষ ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ তুর্কমেনিস্তান ও মিয়ানমারের প্রতিপক্ষ বাহরাইন। পরের ম্যাচ জিতলেই ইতিহাস রচনা হবে বাংলাদেশ নারী ফুটবলে। প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ খেলবে নারী ফুটবলে এশিয়ার সবচেয়ে বড় প্রতিযোগিতা এএফসি এশিয়া কাপের চূড়ান্ত পর্বে।
'সি' গ্রুপ থেকে কারা আগামী বছর অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিতব্য এএফসি এশিয়ান কাপের চূড়ান্ত পর্বে উঠবে, তা অনেকটাই নির্ভর করছিল বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের ম্যাচের ফলাফলের ওপর। দুই দলই নিজেদের প্রথম ম্যাচে জিতেছে বড় ব্যবধানে। শক্তি, মাঠ, দর্শক মিলিয়ে এই ম্যাচে ফেবারিট ছিল মিয়ানমারই।
তবে সবকিছু তুরি মেরে উড়িয়ে দিয়েছেন লাল-সবুজ জার্সিধারী মেয়েরা। আগের দুইবার এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে ৫ ম্যাচ খেলে সবগুলো হারা বাংলাদেশ এবার টানা দুই ম্যাচ জিতে চূড়ান্ত পর্বের টিকিট পাওয়ার দৌড়ে এগিয়ে গেলো সবার চেয়ে।
বাংলাদেশের দুটি গোলই করেছেন পাহাড়িকন্যা ঋতুপর্ণা চাকমা। ১৮ মিনিটে তার গোলে লিড নিয়েছিল বাংলাদেশ। ৭১ মিনিটে তার গোলেই ব্যবধান দ্বিগুণ করেন আফঈদারা। শেষ পর্যন্ত দুই গোল ধরে রেখেই মাঠ ছেড়েছেন পিটার বাটলারের শিষ্যরা।
এএফসি এশিয়ান কাপ ফুটবলের চূড়ান্ত পর্বে খেলার সুযোগ উজ্জ্বল করতে মিয়ানমারের বিপক্ষে জয়ের বিকল্প নেই, এমন পরিসংখ্যান মাথায় রেখে ইয়াঙ্গুনে স্বাগতিকদের বিপক্ষে মাঠে নামে বাংলাদেশ। ৭৩ ধাপ এগিয়ে থাকা মিয়ানমারের বিপক্ষে চোখে চোখ রেখে খেলছে আফঈদা খন্দকাররা। ম্যাচের ১৮ মিনিটে বাংলাদেশ গোল করে এগিয়ে যায়।
তহুরা খাতুন বল নিয়ে ঢুকতে গেলে তাকে ফেলে দেন মিয়ানমারের ডিফেন্ডার। বক্সের কোনায় ফ্রিকিক পায় বাংলাদেশ। ঋতুপর্ণা চাকমার নেওয়া ফ্রি কিক মানব দেওয়ালে ফিরলে আবার বল পান তিনি। ঋতুপর্ণা বা পায়ের নিঁখুত শটে পোস্টের কোনা দিয়ে বল জালে পাঠান।
২৫ মিনিটে বাম দিক দিয়ে ঋতুপর্ণার ক্রসে দারুণ সুযোগ এসেছিল ব্যবধান বাড়ানোর। তবে শামসুন্নাহার জুনিয়র বলের কাছাকাছি থাকলেও সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি।
৭১ মিনিটে বাম দিকে ঢুকে ঋতুপর্ণা বাঁ পায়ে কোনাকুনি শটে যে গোল করেছেন, তা দর্শকদের চোখে লেগে থাকবে দীর্ঘদিন। বাংলাদেশ ব্যবধান বাড়াতে পারেনি। তবে ৮৯ মিনিটে মিয়ানমারের উইন উইন গোল করে ব্যবধান ২-১ করেন।