কচিকাঁচা বয়সে হলেও ডেওয়াল্ড ব্রেভিসের ব্যাটিংয়ে স্পষ্টভাবে ফুটে ওঠে এবি ডি ভিলিয়ার্সের খেলার ছোঁয়া। মাঠে দাঁড়িয়ে যখন সে শট খেলতে শুরু করে। তখন চারপাশে প্রাণবন্ততা ছড়িয়ে পড়ে। প্রতিটি ঘূর্ণন আলাদা আনন্দ নিয়ে আসে। প্রতিটি স্ট্রোক মনে করিয়ে দেয় মিস্টার থ্রি সিক্সটির খেলা। দর্শকরা আনন্দের সঙ্গে তাকিয়ে থাকে।
ক্রিকেট মহলে তরুণ এই খেলোয়াড় ইতিমধ্যেই নিজের একটি আলাদা পরিচয় তৈরি করেছে। অসাধারণ ব্যাটিং এবং রোমাঞ্চকর শটের কারণে তাকে মিষ্টিভাবে ডাকা হয় ‘বেবি এবি’। তার খেলা শুধু রেকর্ড নয়। ভক্তদের জন্য নতুন আশা এবং উত্তেজনার প্রতীক। প্রোটিয়া কিংবদন্তি এবি ডি ভিলিয়ার্স, যিনি ক্রিকেট বিশ্বে ‘মিস্টার ৩৬০ ডিগ্রি’ হিসেবে পরিচিত, এখনও ব্রেভিসের আদর্শ।
কিন্তু তুলনার খোলস থেকে বেরিয়ে এসে নিজস্ব পরিচয় গড়াই ব্রেভিসের বড় লক্ষ্য। বয়সভিত্তিক ক্রিকেটে এই তুলনা প্রথমে আনন্দের হলেও পরে চাপের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এর প্রভাব পড়েছিল মাঠের পারফরম্যান্সেও। ২০২৩ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেকের পর মাত্র ৫ রান করেই তাকে বাদ পড়তে হয়েছিল। একসময় ঘরোয়া ক্রিকেটেও হারের মুখোমুখি হতে হয়েছিল।
তবুও ঝড় থেমে থাকেনি। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সাম্প্রতিক টি-টোয়েন্টি সিরিজে ব্রেভিস নিজেকে নতুন করে পরিচয় করান। দ্বিতীয় ম্যাচে খেলেন রেকর্ড গড়া ১২৫ রানের বিধ্বংসী ইনিংস। এরপর তৃতীয় ম্যাচে আবারও ২৬ বলে ৫৩ রানের ঝড়ো ব্যাটিং করে আলোচনায় আসেন। টানা দুই ম্যাচে অর্ধশতক হাঁকিয়ে তিনি প্রমাণ করেছেন। এখন তিনি নিজেই ক্রিকেটের শিরোনাম।
তার ব্যাটিংয়ে চোখ ধাঁধানো শট। কব্জির মোচড়ে বল মাঠের চারদিকে উড়তে থাকে। প্রতিটি মুহূর্ত দর্শকদের আনন্দের খোরাক জোগায়। ব্রেভিসের মারকাটারি ব্যাটিং শৈলী শুধু উপভোগ্য নয়। বরং ইঙ্গিত দেয়—প্রোটিয়া ক্রিকেটের আগামী দিনের উজ্জ্বল নক্ষত্র হতে পারেন এই তরুণ ব্যাটার।
তার ছোটবেলার কোচ ডিয়ন বোটস বলেছেন, “সেই শুধু খেলতে চেয়েছিলেন। রান করতে চেয়েছিলেন এবং ভালো হতে চেয়েছিলেন। এটাই মূল। তবে কখনও কখনও হয়তো তিনি কিছুটা বিভ্রান্ত ছিলেন যে আসলে কী করতে চান। ছোটবেলায় তার চারপাশে অনেকেই কথা বলেছে। সব শুনে সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব নয়। যখন সে আমার কাছে ফিরে এসেছে, তখন মূলত একক কণ্ঠে ফিরে এসেছে। যা তার জন্য কার্যকর, সেটাই গ্রহণ করেছে।”