ক্রিকেট ভদ্রলোকের খেলা, কিন্তু এশিয়া কাপ ২০২৫-এর ফাইনাল সেই সৌন্দর্যকে ম্লান করে দিল। মাঠের প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছড়িয়ে পড়ল পুরস্কার বিতরণী মঞ্চেও। পাকিস্তানের ১৪৭ রানের টার্গেট অনায়াসে তাড়া করে ভারত শিরোপা নিশ্চিত করলেও শেষ পর্যন্ত হয়ে উঠল বিতর্কের এক নাট্যমঞ্চ। আলোচনার আসল কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়াল পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান।
পুরস্কার বিতরণী শুরুর আগেই দেখা গেল অস্বাভাবিক বিলম্ব। ভারতীয় দল উপস্থিত থাকলেও পাকিস্তান এলো প্রায় আধঘণ্টা পরে। অতিথিরা মঞ্চে উঠলেও অনুষ্ঠান শুরু হতে দেরি হলো আরও এক ঘণ্টা। ভারতীয় শিবির জানাল—তারা পাকিস্তানি মন্ত্রী ও এসিসি চেয়ারম্যান মহসিন নাকভির হাত থেকে ট্রফি নিতে রাজি নয়। অন্য কারও হাত থেকে নিতে চায়। কিন্তু আয়োজকরা তাতে সম্মত হলো না।
ফলে রানার্সআপ ও ব্যক্তিগত পুরস্কার বিতরণ হলো। কিন্তু সবচেয়ে প্রত্যাশিত মুহূর্ত—চ্যাম্পিয়ন ট্রফি প্রদান ঘটল না। ট্রফি সরিয়ে নেওয়া হলো। অতিথিরা মঞ্চ ছেড়ে চলে গেলেন। বিস্মিত ভারতীয় ক্রিকেটাররা ট্রফি ছাড়াই মাঠে বসে নিজেদের মতো উদযাপন করলেন।
অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব সংবাদ সম্মেলনে ক্ষোভ প্রকাশ করে বললেন, “এমনটা আগে কখনও দেখিনি। একটি চ্যাম্পিয়ন দলকে ট্রফি থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে।”
আর পাকিস্তানের অধিনায়ক সালমান আলী আগা কড়া সমালোচনা করে বলেন, "ভারত ক্রিকেটকে অসম্মান করেছে।"
এই ঘটনাই ক্রিকেটের ভদ্রলোকসুলভ সৌন্দর্যে কলঙ্কের দাগ টেনে দিল। মাঠের প্রতিদ্বন্দ্বিতা পুরস্কার মঞ্চেও ছড়িয়ে পড়ায় এশিয়া কাপ পেল লজ্জাজনক সমাপ্তি।
ভারত-পাকিস্তান দ্বন্দ্বের ইতিহাস দীর্ঘদিনের। ১৯৮৬ সালের এশিয়া কাপে ভারত অংশ নেয়নি; শ্রীলঙ্কা সফরে না যাওয়ার কারণে। আবার ১৯৯০-৯১ আসরে পাকিস্তান খেলেনি। ভারতের সঙ্গে টানাপোড়েনের জেরে। তবে এবারের ঘটনা যেন সব সীমা ছাড়িয়ে গেল।
এমন নজিরবিহীন কাণ্ড ক্রিকেটের জন্য শুভ নয়। অদূর ভবিষ্যতে এই রেষারেষি যদি আরও ঘনীভূত হয়। তবে ভদ্রলোকের খেলা হিসেবে পরিচিত ক্রিকেট তার সৌন্দর্য হারাবে। কুলষিত হয়ে পড়বে।