নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে চমকপ্রদ সূচনা করেছে বাংলাদেশ। কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে টস জিতে পাকিস্তান অধিনায়ক ফাতিমা সানা প্রথমে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেন। বাংলাদেশ অধিনায়ক নিগার সুলতানা জানান, যদি তিনি টস জিততেন, তিনি নিজেই আগে ব্যাটিং নিতেন। এই ম্যাচকে ঘিরে পুরো দলের আশা-আকাঙ্ক্ষা উজ্জ্বল।
তবে বোলিংয়ের প্রথম ওভারেই বাংলাদেশের জন্য খোলা হলো সোনালি সুযোগ। পঞ্চম বলেই তরুণ পেসার মারুফা আক্তারের নিখুঁত ইন-সুইং ডেলিভারিতে পাকিস্তানি ওপেনার উমাইমা সোহেল বোল্ড হয়ে ফেরেন। ঠিক পরের বলেই একই ধরনের ডেলিভারিতে ব্যাটের ভেতরের অংশে লেগে তিন নম্বরে নামা সিদ্রা আমিনও বোল্ড হন। দুজনই মাত্র এক বল খেলে শূন্য রানে আউট হন।
দুই উইকেট নেওয়ার পর পরের ওভারে মারুফার হ্যাটট্রিকের সুযোগ আসে। যা দেখেশুনে খেলেন মুনিবা আলি। এই ম্যাচে মারুফা দেশের একমাত্র পেসার ছিলেন। অন্য পেস বোলিং অলরাউন্ডার রিতু মনিকে দলে নেওয়া হয়নি। আন্তর্জাতিক ওয়ানডেতে অভিষেক হয়েছে রুবাইয়া হায়দার ঝিলিকের।
মারুফার সিম পজিশন, রিস্ট পজিশন, ডেলিভারির শেইপ, সুইং এবং মুভমেন্ট—সবই নিখুঁত। ছোটবেলায় বাবার সঙ্গে চাষের জমিতে হালের জোয়াল টানার অভ্যাস থেকে শুরু করে আজ তিনি দেশের পেস বোলিং প্রায় একাই টেনে নিচ্ছেন। প্রতিটি বল যেন ব্যাটসম্যানদের জন্য চ্যালেঞ্জ আর দর্শকদের জন্য উত্তেজনার মুহূর্ত।
ওমাইমা সোহেল এবং সিদ্রা আমিনকে শূন্যে ফেরিয়ে প্রথম দুই বলেই তিনি প্রমাণ করেছেন কেন মারুফা বাংলাদেশের পেস আক্রমণের অন্যতম শক্তিশালী অস্ত্র। এই জাদুকরী স্পেল শুধু দলের মনোবলই বাড়ায়নি। বাংলাদেশের নারী ক্রিকেটের ভবিষ্যতের জন্যও নতুন উদ্দীপনা জুগিয়েছে।
প্রথম ম্যাচ থেকেই মারুফা আক্তারের খেলায় ফুটে উঠেছে দৃঢ়তা, নিখুঁত বোলিং এবং অটল আত্মবিশ্বাস। যা আগামীর নারীর ক্রিকেটের অনুপ্রেরণার এক জীবন্ত প্রতীক। আর সেই জাদুকরী সূচনা ধরে রেখেই বাংলাদেশ পাকিস্তানকে হারিয়ে দারুণ জয় দিয়ে বিশ্বকাপ মিশন শুরু করেছে।