প্রতীকা রাওয়াল এখন ভারতের নারী ক্রিকেট দলের একটি পরিচিত মুখ। তবে তার সাফল্যের পথ মোটেই সহজ ছিল না। ছোটবেলা থেকেই সে পরিশ্রমী এবং নিয়মিত অনুশীলনে বিশ্বাসী। কোচ দীপ্তি বলেন, “অনেকে মনে করে জিম মানে শুধু পেশি বড় করা। কিন্তু প্রতীকা জানত, জিম করলে শরীর চোটমুক্ত থাকে। তাই সে সবসময় নিজের ফিটনেসের প্রতি মনোযোগী ছিল।”
খেলাধুলার পাশাপাশি পড়াশোনাতেও তার খুব আগ্রহ ছিল। নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় থেকেই সে মনোবিজ্ঞানের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে ওঠে। পরে কলেজে সেই বিষয়েই পড়াশোনা করে। প্রতীকা বলেন, “ক্রিকেটে মনোবিজ্ঞান খুব গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিপক্ষের ভাবনা বোঝা বা তারা কেন ওই ফিল্ড সাজিয়েছে। এসব বুঝলে খেলায় অনেক সাহায্য হয়।”
মাঠের বাইরে প্রতীকা শান্ত ও ধৈর্যশীল। রুবিকস কিউব সমাধান তার প্রিয় কাজ। সে বলে, “এর নিয়ম আছে। মাঝখানের টুকরো নাড়িয়ে চারপাশের অংশগুলো সরাতে হয়।” তার জীবনও এমন সবকিছু ঠিকভাবে করতে জানে, ধৈর্য এবং বুদ্ধি দিয়ে।
দেশীয় ক্রিকেটে ভালো খেলার পরও গত বছরের নারী প্রিমিয়ার লিগে (WPL) কেউ তাকে নেয়নি। এটি তার জন্য বড় ধাক্কা ছিল। কিন্তু সে হতাশ হয়নি। আরও মন দিয়ে অনুশীলন করতে থাকে। কিছুদিন পরই আসে বড় সুযোগ। ভারতীয় দলে ডাক পায় প্রতীকা। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তার অভিষেক হয়। এরপর থেকে ব্যাট হাতে সে দারুণ ফর্মে আছে। ষষ্ঠ ম্যাচেই আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ১৫৪ রান করে সবাইকে চমকে দেয়।
এর পর থেকে সে করেছে সাতটি ফিফটি ও একটি সেঞ্চুরি। বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ভারতের হয়ে ওপেনিংয়ে নামতে গিয়ে স্মৃতি মন্ধানার সঙ্গে ১৫৫ রানের জুটি গড়ে। সেই ম্যাচে প্রতীকা করেন ৭৫ রান। তার বাবা বলেন, “আমরা এই বিশ্বকাপ জিতব। প্রতীকা দলের জন্য সবকিছু উজাড় করে দেবে।”
প্রতীকা রাওয়াল এখন অনেক তরুণীর প্রেরণা। ব্যর্থতা তাকে থামাতে পারেনি। সে দেখিয়েছে, পরিশ্রম আর বিশ্বাস থাকলে সুযোগ নিজেই আসবে।