সুইডেনের দক্ষিণাঞ্চলের পুঁচকে গ্রাম হ্যালেভিক। গ্রামের সিংহভাগ মানুষ জেলে। নদী-সমুদ্রে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন। সর্বসাকুল্যে ৮০০ থেকে এক হাজারের মতো মানুষের বসবাস। তাদের গ্রামে নেই কোনো ভালো মানের স্টেডিয়াম। মিয়ালবি তাদের হোম ম্যাচ খেলে হ্যালেভিকের স্ট্র্যান্ডভালেন স্টেডিয়ামে। যেখানে দর্শক ধারণক্ষমতা মাত্র ছয় হাজার।
কিন্তু তাদের স্বপ্নের পরিধি আকাশছোঁয়া। সেখানকার স্থানীয় ক্লাব মিয়ালবি এআইএফ লিখে ফেলেছে ইতিহাস। ক্লাবটি প্রথমবারের মতো আলসভেনসকান লিগের শিরোপা জিতে নিল। ফুটবলবিশ্ব ইতোমধ্যেই তুলনা টানছে ২০১৫–১৬ মৌসুমের লেস্টার সিটির বিস্ময়কর প্রিমিয়ার লিগ জয়ের সঙ্গে।
মিয়ালবির সাফল্যের পেছনে রয়েছে দীর্ঘ লড়াইয়ের ইতিহাস। ১৯৩৯ সালে ক্লাবটি প্রতিষ্ঠাতার পর বহু বছর তারা খেলেছে আঞ্চলিক লিগে। ২০১৫ সালে চেয়ারম্যান ম্যাগনাস এমেউস দায়িত্ব নেন। যখন ক্লাব ছিল চরম আর্থিক সংকটের মুখে। তিনি ক্লাবকে নতুনভাবে গড়ে তোলার উদ্যোগ নেন। যার ফল আজ সুইডিশ ফুটবলে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু ক্লাবটি।
একটি ছোট উপকূলীয় গ্রাম থেকে উঠে আসা মিয়ালবি দেখিয়ে দিল। বড় স্বপ্ন পূরণের জন্য বাজেট নয়। দরকার বিশ্বাস। একতা। ক্লাবের মূল দর্শন ‘বিনামূল্যের জিনিসে সেরা হওয়া।’
স্থানীয় খেলোয়াড়দের ওপর ভরসা করে কোচ আন্ডার্স টরস্টেনসন ও সহকারী কার্ল মারিয়াস আক্সুম দলটিকে আক্রমণাত্মক ও সাহসী ফুটবলে রূপান্তর করেছেন। ফল মিলেছে দারুণভাবে ২৪ ম্যাচে মাত্র এক হার। ৪৪ গোল। হাতে ৫৭ পয়েন্ট!
সেই গ্রামের মানুষ এখন উৎসব উদ্দীপনায় মাতোয়ারা। মিয়ালবির এই সাফল্য প্রমাণ করেছে। সাহস, পরিশ্রম ও ঐক্য থাকলে ছোট গ্রাম থেকেও বিশ্ব ফুটবলে আলো ছড়ানো সম্ভব।