ব্রেন্ডন ডগেটের গল্পটা একটু আলাদা। অস্ট্রেলিয়ার ঘরোয়া ক্রিকেটে তিনি অনেক বছর ধরে খেলেছেন। কিন্তু আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে কখনো ছিলেন না। কারণ ক্রিকেটের বাইরে তার আরেকটি পরিচয় ছিল। তিনি ছিলেন একজন কাঠমিস্ত্রি। নির্মাণ সাইটে কাজ করতেন। কাঠ কাটতেন। ফ্রেম তৈরি করতেন। এই কাজ করেই তিনি জীবিকা চালাতেন আর ফাঁকে ফাঁকে ক্রিকেট খেলতেন।
টুভুম্বা শহরে দিনের বেলা কাজ আর সন্ধ্যায় অনুশীলন ছিল তার নিয়মিত জীবন। তিনি বলতেন কাঠমিস্ত্রির জীবনটাই তার কাছে পরিপূর্ণ ছিল। নেল ব্যাগ কোমরে বেঁধে বাড়ি বানানো তাকে শান্তি দিত। ক্রিকেটে সফলতা না এলেও তিনি সেই জীবন নিয়ে সন্তুষ্ট ছিলেন। কিন্তু সময় তার জন্য অন্য পরিকল্পনা রেখেছিল।
ধীরে ধীরে ঘরোয়া ক্রিকেটে তার পারফরম্যান্স সবাইকে ভাবতে বাধ্য করল। এরপর চোট আঘাতে দলে জায়গা খালি হলে ডগেট সুযোগ পেলেন নিজেকে দেখানোর। গত দুই বছর তার জন্য সবচেয়ে ভালো গেছে। তিনি আরও ফিট হয়েছেন। আরও আত্মবিশ্বাসী হয়েছেন এবং উইকেটের সংখ্যাও বেড়েছে। এখন তিনি অ্যাশেজ সিরিজে টেস্ট অভিষেকের খুব কাছে।
আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো তিনি হতে পারেন অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাসে মাত্র তৃতীয় আদিবাসী ক্রিকেটার। তার আগে ছিলেন জেসন গিলেসপি এবং স্কট বোল্যান্ড। আদিবাসী সম্প্রদায় অস্ট্রেলিয়ায় অনেক খেলায় ভালোভাবে প্রতিনিধিত্ব পেলেও ক্রিকেটে এখনো কম দেখা যায়। তাই ডগেটের উত্থান সেই সম্প্রদায়ের জন্যও গর্বের বিষয়। ব্রেন্ডন ডগেট আজ যখন টেস্ট দলে জায়গা পাওয়ার অপেক্ষায়।
তখন তার পুরোনো দিনের কাঠমিস্ত্রির কাজগুলো যেন তাকে আরও শক্তি জোগায়। সেই পরিশ্রম তাকে ধৈর্য শিখিয়েছে। মনোযোগ শিখিয়েছে এবং নিজের ওপর ভরসা করতে শিখিয়েছে। কাঠ কাটা আর বোলিং করা দুটোর মধ্যেই ছিল একই শিক্ষা। সহজ জীবন থেকে বড় স্বপ্নে পৌঁছানোর তার এই গল্প প্রমাণ করে পরিশ্রম কখনো ব্যর্থ হয় না। সুযোগ একদিন না একদিন আসেই।