ঘুরে বেড়ানোর পাশাপাশি যারা অ্যাডভেঞ্চার ভালবাসেন, তাদের ডাকছে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম প্রাকৃতিক বনাঞ্চল ‘রেমা-কালেঙ্গা’। এই বনে ঘুরার সময় বন-পাহাড়-বন্যপ্রাণীর সংস্পর্শ রোমাঞ্চকর এক অনুভূতির সৃষ্টি হবে ভ্রমণপিপাসুদের মধ্যে। হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলা সদর থেকে রওয়ানা হওয়ার কিছুক্ষণ পর থেকেই রাস্তার দু’ধারে চা বাগান, দুর্গম পাহাড়ি ছড়া পেরিয়ে যেতে হয় রেমা-কালেঙ্গায়।
পৌঁছার পর বন বিভাগের বাংলোতে বিশ্রাম নেয়ার সুযোগ রয়েছে। তারপর স্থানীয় গাইড বনে ঘুরতে সহায়তা করবে। রেমা-কালেঙ্গা বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য হওয়ায় নিরাপত্তার জন্য বনটির সংরক্ষিত কিছু স্থানে যাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তবে যতটুকু ঘুরতে পারা যাবে, ততটুকুতেই শিহরিত হবে হয়। এই দুর্গম বনে ঘোরার জন্য পায়ে কেডস্, ট্রাকস্যুট, ক্যাপ পরতে হবে। আর হাতে রাখতে হয় একটি শক্ত লাঠি। যার ওপর ভর করে দুর্গম পাহাড়ি রাস্তা ও পানির ছড়াগুলো হাটতে হবে।
বনে ঘুরতে পর্যটকরা আধ ঘন্টা, এক ঘন্টা ও তিন ঘন্টার চিহ্নিত পায়ে হাটার পথ থেকে একটি বেছে নিতে হবে। তাছাড়া পর্যটকদের জন্য ওয়াচ টাওয়ারও আছে। যার ওপর ওঠলে পাহাড় ও বনের দৃশ্য চোখ ধাঁধিয়ে দেবে। এই অভয়ারণ্যে ত্রিপুরা, সাওতাল, উড়ং ও তেলগু ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর বসবাস।
হাইকিংয়ের সময় ধনেশ, ময়না, টিয়া, ঘুঘু, মানিকজোড়, হুতুমপেঁচাসহ অসংখ্য প্রজাতির পাখির কিচির মিচির শব্দ পুরো সুনসান নীরব বনকে চাঙা করে রাখে। সেখানে মুখপোড়া ও চশমাপড়া হনুমান, লজ্জাবতী ও রেসাস বানরের সাথেও দেখা হবে। বনের ভেতর দৌঁড়াদৌড়ি করবে মেছো বাঘ, বন্য শুকর, মায়া হরিণ, উড়ন্ত কাঠবিড়ালী, বেজি ইত্যাদি ইত্যাদি।
যেভাবে যাওয়া যাবে- ঢাকা থেকে ১৫০ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে, হবিগঞ্জ জেলা সদর থেকে ৪৮ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্ব এবং সিলেট থেকে ৮০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে এ বনের অবস্থান। ঢাকা থেকে বাসযোগে করে শায়েস্তাগঞ্জ নতুন িিব্রজ গোলচত্বর পয়েন্টে নামতে হবে। ঢাকা থেকে ট্রেনে আসলে নামতে হবে শায়েস্তাগঞ্জ জংশনে। দুই স্থান থেকে অটোরিক্সা বা মাইক্রোবাস ভাড়া করা এই অভয়ারণ্যে যাওয়া সম্ভব। বনে রাত্রিযাপনের জন্য বন বিভাগ একটি বিশ্রামাগার রেখেছে।